গাবতলী থেকে: বিরোধীদলের অবরোধে শিশুদের পোলিও টিকা খাওয়ানোর কাজে ভাটা পড়েছে। গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় টার্গেটের মাত্র সাড়ে সাত শতাংশ শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়াতে পেরেছেন কর্তৃপক্ষ।
দেশে পোলিও মুক্ত অবস্থা বজায় রাখতে শনিবার সারাদেশে ২১তম জাতীয় টিকা দিবস পালন করে সরকার।
এদিন সারা দেশে ১ লাখ ৩০ হাজার টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে শূন্য থেকে পাঁচ বছরের ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানোর কথা।
এরমধ্যে বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালসহ বিভিন্ন জনসমাগমস্থলে স্থাপিত অস্থায়ী কেন্দ্র রয়েছে।
সকাল ছয়টা থেকে গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় নয়টি অস্থায়ী কেন্দ্রে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়।
প্রতিটি কেন্দ্রে ১২০টি করে মোট এক হাজার ৮০টি শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানোর কথা ছিল। কিন্তু বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত মাত্র ৫০টি শিশুকে খাওয়াতে পেরেছে সংশ্লিষ্টরা।
গাবতলী বাস টার্মিনালের আন্ডার পাসের পাশে বসানো অস্থায়ী কেন্দ্রে মাত্র ১০টি শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছে।
এই কেন্দ্রের দায়িত্বরত মাইনুল হক শাওন ও ফকরুল হক স্বাধীন বাংলানিউজকে বলেন, ১২০ টার্গেটের মধ্যে মাত্র ১০টি শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছে।
অবরোধের কারণে বাস টার্মিনালে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম। ফলে টার্গেটের ধারে কাছেও যেতে পারেনি এই সংখ্যা।
এ এলাকার অন্যান্য কেন্দ্রের তথ্য দিয়ে তারা বলেন, সকাল থেকে মাত্র ৫০টি শিশুকে খাওয়াতে পেরেছে। রাত ১০টা পর্যন্ত এসব কেন্দ্রে দু ফোঁটা করে টিকা খাওয়ানো হবে।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসচিব এমএম নিয়াজউদ্দিন পোলিও টিকা খাওয়ানোর প্রস্তুতি তুলে ধরে বলেন, একটি শিশুও যেন এ কর্মসূচি থেকে বাদ না পড়ে। সেজন্য তিনি বিরোধীদলকে এই টিকাদান যাতে বাধাগ্রস্ত হয় এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
কিন্তু পোলিও টিকা কর্মসূচির এই দিন শনিবার থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অবরোধে কার্যত ভাটা পড়ে পোলিও টিকা কার্যক্রম।
মারাত্মক ভাইরাজজনিত পোলিও রোগ একমাত্র টিকাদানের মাধ্যমেই নির্মূল করা যায়।
বাংলাদেশে পোলিও টিকা পরপর তিন বছর শূন্যভাগ থাকলেও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর জন্য পোলিও নির্মূল সনদ পাচ্ছে না। ভারতেও পর পর তিন বার শূন্যভাগ রয়েছে। তবে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ পোলিও নির্মূল সনদ পাবে বলে আশা করেছেন স্বাস্থ্যসচিব।
দেশকে পোলিও মুক্ত করতে জাতীয় টিকা দিবসের পরবর্তী চারদিন চাইল্ড টু চাইল্ড সার্চ কার্যক্রম চলবে। এতে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে যাতে কোনো শিশু বাদ না যায়।
স্বাস্থ্য বিভাগের ৬০ হাজার কর্মীর সঙ্গে ছয় লাখ স্বেচ্ছাসেবী পোলিও টিকা খাওয়ানোর জন্য কাজ করবে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৩
সম্পাদনা: সুকুমার সরকার আউটপুট এডিটর, কো-অর্ডিনেশন