ঢাকা: ১৩ মার্চ বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় প্রদীপ শোভাযাত্রা করেছে কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাহবাগ থেকে প্রদীপ শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
এতে নেতৃত্ব দেন ক্যাম্পস সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিস সিদ্দিক।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- জনপ্রিয় ক্রিকেটর গাজী আশরাফুল হক লিপু, মো. আশরাফুল, জাবেদ ওমর বেলিমসহ চিকিৎসক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, ছাত্রছাত্রীসহ সব পেশার লোকজন।
এ বছর বিশ্ব কিডনি দিবসের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘Chronic kidney disease (CKD) and ageing’, hv প্রতীকী অর্থে দাঁড়ায়- ‘কিডনি রোগের ধীরগতি, বাড়ে বয়স বাড়ে ক্ষতি’।
শোভাযাত্রা শেষে একটি পথসভার আয়োজন করা হয়।
এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ স ম আরেফিন সিদ্দিক বলেন, কিডনি রোগ অত্যন্ত ভয়াবহ এবং কিডনি বিকল হলে এর চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কাজেই, এ রোগ প্রতিরোধ করার জন্য দেশব্যাপী গণসচেতনতা গড়ে তোলা উচিত।
ক্যাম্পস-এর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে শোভাযাত্রা, লিফলেট, প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, ইত্যাদির মাধ্যমে প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে প্রচারণায় এগিয়ে আসা উচিত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ক্যাম্পস-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ বলেন, কিডনি রোগ ভয়াবহ কিন্তু প্রতিরোধযোগ্য।
তিনি বলেন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও নেফ্রাইটিস এ তিনটি কারণে ৮০ ভাগেরও বেশি কিডনি বিকল হয়ে থাকে। কিডনি ভালো রাখতে হলে এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
কিডনি রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে তিনি বলেন, কিডনি রোগ প্রতিরোধে সুস্থ জীবন-যাত্রার প্রণালী চর্চা করতে হবে। তেমনি নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান পরিহার, সুষম খাদ্যগ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান, অতিরিক্ত বেদনানাশক ওষুধ বা অ্যান্টি-বায়োটিক না খাওয়া এবং লবণ না খাওয়া। এগুলো মেনে চললেই কিডনি সুস্থ রাখা যাবে।
ক্রিকেট তারকা গাজী আশরাফুল হক লিপু, জাবেদ ওমর বেলিন, মো. আশরাফুল, নিয়মিত ব্যায়াম ও সুশৃঙ্খল জীবন-যাপনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।
বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পস আয়োজিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশে সচেতনতা সৃষ্টিতে র্যালি বের করা হয়।
ক্যাম্পস, বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন ও কিডনি ফাউন্ডেশন-এর যৌথ উদ্যোগে অপর একটি র্যালি বৃহস্পতিবার সকালে বের করা হয়।
র্যালিটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট থেকে শুরু হয়ে মৎস্য ভবনের সামনে থেকে আবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টটিউটে এসে শেষ হয়।
র্যালি শেষে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটি লোক কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি বিকল হয়ে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচজন অকালে মৃত্যুবরণ করছেন। সাধারণত ৭৫ ভাগ কিডনি নষ্ট হওয়ার আগে রোগী বুঝতেই পারেন না যে, তিনি ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত। কিডনি বিকল রোগের চিকিৎসা এতই ব্যয়বহুল যে, এ দেশের শতকরা পাঁচভাগ লোকেরও সাধ্য নেই এর চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার।
পাশাপাশি কিডনি সংযোজনের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। এমনি এক প্রেক্ষাপটে কিডনি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগের কারণ ও কিডনি রোগ শনাক্ত করে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করতে এবং চিকিৎসাবঞ্চিত কিডনি বিকল রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়, কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৪