ঢাকা: প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে সাংবাদিকদের তথ্য সরবরাহে তথ্য কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। সেখানে থাকছেন মুখপাত্রও।
এছাড়া হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক বা রোগীর স্বজনরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য একটি আইন করতে হচ্ছে। যা খসড়া পর্যায়ে রয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএমএ) এবং সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম একথা জানান। বৈঠকে তিনটি হাসপাতালে সৃষ্ট ঘটনা তদন্তে পৃথক তিনটি কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি রাজধানীর বারডেম, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে রোগীর স্বজন এবং সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনা ঘটে। চিকিৎসকরাও ধর্মঘটের ডাক দেন। এতে দুর্ভোগে পড়ে রোগীরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসক এবং সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
বিকাল পৌনে পাঁচটা থেকে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, মেডিকেলের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন দেবে। এরপর দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজশাহীতে সাংবাদিকদের উপর হামলার পর আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে সহয়তা দেবে বিএমএ। এছাড়া সাংবাদিকদের ক্যামেরার ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে বলে জানান নাসিম।
রাজশাহীতে রোগী না মারা যাওয়ার পরও একটি সংবাদের জেরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কথা উল্লেখ করে নাসিম বলেন, হাসপাতালের মত সংবেদনশীল জায়গায় সংবাদ পরিবেশনে বিভ্রান্তি এড়াতে প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে একটি করে তথ্যকেন্দ্র বা একজন মুখপাত্র রাখা হবে।
রাজশাহীসহ অন্যান্য মেডিকেলের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, আশা করি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।
চিকিৎসকরা আর ধর্মঘটে যাবেন না আশ্বাস দিয়ে মন্ত্রী সাংবাদিকদেরও আইন হাতে না তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। মন্ত্রী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের গাফিলতির জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, হবে।
বৈঠকে উপস্থিত বিএমএ’র মহাসচিব, সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে সমকাল সম্পাদক গোলাম সারোয়ার, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, আলতাফ মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তদন্ত কমিটি
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে রাজশাহী মেডিকেলের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটিতে আছেন বিএমএ সভাপতি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক/সহকারী পরিচালক, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়েনের প্রতিনিধি। কমিটিতে সদস্যসচিব হিসেবে রয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হুমায়ুন কবির।
স্যার সলিমুল্লাহ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সৈয়দা আনোয়ারা বেগমকে। এছাড়া সদস্য হিসেবে বিএমএ মহাসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক/সহকারী পরিচালক, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি। কমিটিতে সদস্যসচিব হিসেবে রয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জিল্লুর রহমান চৌধুরী।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব গৌতম আইচ সরকারকে প্রধান করে বারেডেম হাসপাতালের ঘটনা তদন্তে কমিটিতে রয়েছেন মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক/সহকারী পরিচালক, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়েনের প্রতিনিধি এবং কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব এজাজ আহমেদ জাবের।
** মেডিকেলের ৪ ঘটনায় ৩ কমিটি, চিকিৎসকদের আন্দোলন প্রত্যাহার
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৪