ঢাকাঃ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। সময় রাত দেড়টা।
ওয়েটিং রুমের ভেতরে চেয়ারে বসে দেয়ালে মাথাটা হেলিয়ে দিয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন কেউ কেউ। চোখে-মুখে উদ্বেগের ছাপ। কারো মৃত্যু হলে তার লাশও নিয়ে যাচ্ছে স্বজনরাই।
রুগীর সঙ্গে আসা এমনই একজন স্বজন মো. আসাদ মিয়া। একটি ট্রলির উপর বসে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে কি যেন ভাবছেন। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার নানছ্রী গ্রামে। তার বোনের স্বামী মোঃ শোয়েব মল্লিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছেন গত তিন দিন ধরে। ব্রেন স্ট্রোক করেছেন শোয়েব মল্লিক। ডাক্তার বলেছে সামনের বৃহস্পতিবার অপারেশন হবে। এখন সে দিনের অপেক্ষা। টেনশন নিয়ে ঘুম আসবে না জানালেন আসাদ মিয়া।
চাঁদপুর থেকে এসেছেন মোঃ নাজির আলী। চাচাতো ভাই মিজান খুব অসুস্থ। শরীরে নাকি রক্ত থাকেনা তার। দেখে রক্তশূন্য মনে হয়। গত দু'তিন দিন থেকে নড়াচড়াও করতে পারছেন না তিনি। কিন্তু ডাক্তার কিছু বলছে না। কখন কি লাগে সে চিন্তায় নির্ঘুম রাত কেটেছে নাজির আলীরও।
৬০ বছরের এক বৃদ্ধের দেখা মিললো মেডিকেল চত্বরে, নাম মুহুর আলী। এসেছেন ঝালকাঠি থেকে। নিজের জোয়ান বয়সের ছেলেটা ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাকে নিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরছেন মুহুর আলী। বললেন খুব কষ্ট হয় বাবা, ছেলে তো আমার, কি করবো। আল্লাহ যদি ছেলেটাকে এই কঠিন রোগটা না দিয়ে আমাকে দিতো। হাসপাতালে থাকাটা খুব কষ্টের। এখানে মানুষের অনেক কষ্ট, চোখের সামনে কত মানুষের কত কষ্ট দেখছি।
বাংলাদেশ সময়ঃ ০৩২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৬
এএস/জেডএম