ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত গর্ভবতী নারী!

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৮
সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত গর্ভবতী নারী! রোগীর কাগজপত্র

মৌলভীবাজার: শ্রীমঙ্গল উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতিকালীন সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এক নারী। এ হাসপাতালে নিয়মিত চেকআপ এবং গর্ভবতীর নিবন্ধন কার্ড থাকার পরেও তিনি পাননি প্রসূতিকালীন সেবা। অবশেষে বাধ্য হয়ে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে প্রসূতিকালীন অস্ত্রোপচার করান তিনি। 

এ অভিযোগ জানান ভুক্তভোগী ওই নারীর পরিবার।

অভিযোগে বলা হয়, সরকারি হাসপাতালের ডিউটি ফেলে প্রাইভেট ক্লিনিকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অস্ত্রোপচার করেন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. সাজ্জাদ হোসেন এবং ডা. রোকশানা পারভীন।

আর বিভিন্ন অজুহাতে গর্ভবতী নারীদের স্থানীয় ক্লিনিকে যেতে বাধ্য করেন তারা।

জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতিবিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন ডা. রোকশানা পারভীন। এছাড়া অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক হিসেবে অস্ত্রোপচারে সহযোগিতা করেন ডা. সাজ্জাদ হোসেন। ডাক্তার সংকট, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে কোনো অবস্থাতেই গর্ভবতী নারীর অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়, বেসরকারি ক্লিনিকে সুবিধা বেশি প্রভৃতি কথাবার্তা শোনা যায় এদের মুখ থেকে। আর এভাবেই গ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী মা এবং তাদের পরিবারকে ফাঁদে ফেলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে।  

১৪ আগস্ট (মঙ্গলবার) উপজেলার সাতগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলীসা গ্রামের বাসিন্দা আয়ুব আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমার মেয়ে নাসরিন আক্তার শ্রীমঙ্গল উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গর্ভবতী নিবন্ধন কার্ডের আওতায় থাকার পরও তাকে এখানে সিজার (অস্ত্রোপচার) করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার ডা. সাজ্জাদ হোসেন এবং উনার স্ত্রী ডা. রোকশানা পারভীন নানা সমস্যার কথা বলে সিজারের জন্য বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে বলেন।  

আয়ুব আলী আরও বলেন, আমি ক্রমাগত অনুরোধ করতে থাকলে একপর্যায়ে, ‘আমি যদি ভুল করে অ্যানেসথেসিয়া ইনজেকশন বেশি দিয়ে দেই তবে এর দায় কে নেবে?’- এমন কথা বলেন ডা. সাজ্জাদ হোসেন। উনার এই কথা শুনে গত ৮ আগস্ট স্থানীয় শহরের গুহরোডের কেয়ার ক্লিনিকে দুপুর দু’টোয় নাসরিনকে ভর্তি করাই। কিছুক্ষণ পর দেখতে পাই, ডা. রোকশানা এবং ডা. সাজ্জাদ হোসেন দুজনেই কেয়ার ক্লিনিকে এসে আমার মেয়ের সিজারের কাজ সম্পূর্ণ করছেন।  

প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজার করা বাবদ ত্রিশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, অথচ শ্রীমঙ্গল উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তা বিনামূল্যে হয়ে যেত বলে জানান আয়ুব আলী।  

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়নাল আবেদীন টিটু বলেন, আমি সিলেট রয়েছি। এসে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো। সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি ডা. সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন।  

ডা. সাজ্জাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি হাসপাতালে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টার পর কোনো সিজার হয়না। আর তাছাড়া আমাদের জনবল সংকটও রয়েছে।  

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মৌলভীবাজারের ভারপ্রাপ্ত সিলিভ সার্জেন ডা. বিনেন্দু ভৌমিক বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৮
বিবিবি/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।