বুধবার (৩১ জুলাই) জেলার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ৩২ জনসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৩৮জন।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ফেনীতে আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীদের বেশিরভাগই ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে এলেও গত দু’দিনে ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসের একছাত্র ও ২ শিশুসহ স্থানীয়ভাবে তিনজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।
ফেনীর স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, গত কয়েকদিনে জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আর নতুন করে স্থানীয়ভাবে ফেনী সরকারি কলেজের এক ছাত্র ও ২ শিশু ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। অন্যান্য রোগীর সঙ্গে জ্বর নিয়ে আসা রোগীরদের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্কে সৃষ্টি হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়ায় স্থান সংকুলান না হওয়ায় ভর্তির রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষকে। সিট না পেয়ে অনেক রোগী হাসপাতালের মেঝেতে আর বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আগতদের মধ্যে যাদের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে তাদের প্রায় সবাই ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে আক্রান্ত হয়ে এলেও গত দু’দিনে স্থানীয়ভাবে ৩ জন আক্রান্ত হওয়ায় নতুন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ডেঙ্গুতে আকান্ত ফেনী সরকারি কলেজের ছাত্র হাসান বলেন, কয়’দিন আগে ফ্রিতে ওষুধ না পেলেও বুধবার থেকে ওষুধ-সেবা দুটোই পাচ্ছি। হাসান ছাড়া ফেনীর ফুলগাজীর কিসমত গনিয়া মোড়া এলাকার হোসেন (১১) ও একই উপজেলার বাসুড়া গ্রামের অরুপ দেব নাথ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
ওই তিনজনই স্থানীয়ভাবে ওই রোগে আক্রান্ত। বাকিরা ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে সংক্রমিত হয়ে জেলায় এসে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানালেন ফেনীর চিকিৎসকরা।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আবু তাহের পাটোয়ারী বলেন, নতুন রোগীসহ এখন ৩২ জন রোগী আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরমধ্যে ছয়জনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। হাসপাতালে মোট চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৩ জন। হাসপাতালের চিকিৎসক এবং দায়িত্বরত সবাই এ ব্যাপারে আন্তরিকভাবে সেবা দিচ্ছেন। ফ্রিতে দেওয়া হচ্ছে ওষুধ। তবে, স্থানীয়ভাবে তিনজন রোগী ডেঙ্গুতে আকান্ত হওয়ায় এ বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে বলে জানান ওই চিকিৎসক।
আরএমও ডা. আবু তাহের পাটোয়ারী বলেন, যেসব রোগী যে এলাকার সেখানকারের প্রশাসনকে বলা হয়েছে যাতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতাসহ বিভিন্ন ভূমিকা নেওয়ার জন্য।
ফেনী ডায়াবেটিস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, গত কয়েক দিনে ৩০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে অনেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. নিয়াতুজ্জমান জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ডায়াগনস্টিক সামগ্রী বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা স্থান সংকুলানের জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুজন চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারি কর্মসূচি শুরু হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে যা যা করার দরকার সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯
এসএইচডি/এএটি