দেশের ২৮ হাসপাতালে পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা পর্যায়ক্রমে দেশের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করবো।
আর হটলাইনে কল দিয়ে সংযোগ না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেছেন, প্রত্যেক জেলায় পাঁচটি করে হটলাইন দিতে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সোমবার (৩০ মার্চ) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র একজন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
সবশেষ ব্রিফিং পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টায় দেশে মাত্র একজন রোগী শনাক্ত হওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সেমাবার তিনি মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, যে অবস্থায় আছি তাতে আমরা মনে করছি পজিটিভ দিকে যাচ্ছি। বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি।
আইইডিসিআরের ফ্লোরা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের হটলাইনে কল এসেছে চার হাজার ৭২৫টি। এর মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ছিল তিন হাজার ৯৯৭টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এক হাজার ৩৩৮ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫৩ জনের। এদের মধ্যে নতুন করে একজন আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি নারী। তার বয়স ২০ বছর।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমানে করোনা ভাইরাস শনাক্তে ১১টি ল্যাব চালু রয়েছে। আরো ১৭টি ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। কয়েকদিনের মধ্যেই সেগুলোতে পরীক্ষা শুরু হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিদিনই প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছি। রোগী না বাড়লেও প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা ২৮টি জায়গায় টেস্ট ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টেস্টের ব্যবস্থা করা হবে।
করোনা পরীক্ষার সরঞ্জমাদির সংকট আছে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, কিট বিদেশ থেকে আসছে। আমরা নিজেরাও সংগ্রহ করছি। আগের তুলনায় কিট সংগ্রহ অনেক বেড়েছে।
হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোয় করোনা রোগীর চিকিৎসায় ব্যবস্থা বেড়েছে। ঢাকা শহরে অনেক হাসপাতালে চিকিৎসা হচ্ছে। কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে সাধারণ রোগী সরিয়ে কেবল করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে আইসিইউ ও ডায়ালাইসি প্রয়োজন হলে দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমাদের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক আলোচনা হয়, তার দিক নির্দেশনায় আমরা কাজ করছি।
হটলাইনে কল করেও ফোন না ধরা বা পরীক্ষার ব্যবস্থা না করার অভিযোগ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যেগুলো পরীক্ষার প্রয়োজন সেগুলো করা হচ্ছে। সবাই তো পরীক্ষার জন্য ফোন করে না। কেউ কেউ জানার জন্য ফোন করে। যার প্রয়োজন হবে তার পরীক্ষা করা হবে।
‘আমরা কল নেওয়ার জন্য ৫০টি লাইন করছি, প্রত্যেক জেলায় ৫টি করে লাইন দিতে বলেছি। ’
মন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু জায়গায় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে পরীক্ষার হার খুবই কম। লোকজন পরীক্ষার জন্য আসছে না।
করোনা থেকে মুক্ত থাকতে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বিদেশফেরতদের কোয়েন্টিনের নিয়ম এবং স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মেনে চলার আহ্বান জানান জাহিদ মালেক।
আর সাধারণ রোগীরা যেন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাইভেট হাসপাতাল ও চিকিৎসকরা যেন তাদের নিয়মিত কাজ বহাল রাখেন, পিছপা না হন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২০
এমআইএইচ/এএ