চাঁপাইনবাবগঞ্জ: সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক সপ্তাহের বিশেষ ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় সোমবার (২৪ মে) দুপুরে জেলা প্রশাসন জরুরি বৈঠকে বসে।
জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ‘লকডাউন’ চলাকালে জরুরি পরিসেবা ছাড়া সব যানবাহন ও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।
তিনি আরো বলেন, সোমবার (২৪ মে) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে আগামী সোমবার পর্যন্ত জরুরি পরিসেবা বাদে পুরো জেলা সাত দিনের কঠোর লকডাউন থাকবে। কঠোর লকডাউনে রেল যোগাযোগসহ সব প্রকার যাববহন বন্ধ থাকবে, তবে জরুরি পরিসেবা-অ্যাম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী ট্রাক চালু থাকবে। আগামী সাত দিন ২৫ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বাইরের জেলা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোনো পরিবহন ঢুকতে পারবে না এবং জেলা থেকে বাইরে যেতে পারবে না।
জেলা প্রশাসক বলেন, লকডাউন চলাকালীন সব রকম দোকানপাট ও সাপ্তাহিক হাট বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ফার্মেসি খোলা থাকবে। কেউ জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গেলে অব্যশই মাস্ক পরিধান করে যেতে হবে। এমনকি জুম্মাসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ২০ জনের বেশি অংশ নিতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, আম বাজারজাতকরণ ও পরিবহন করতে, আমের আড়তের পরিধি বাড়াতে হবে। তবে সরাসরি বাগান থেকে ট্রাকে আম পরিবহন করা যাবে। অনলাইনে অর্ডার নিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। এছাড়াও শিল্প কলকারখানার শ্রমিকরা নিজস্ব পরিবহনে যাতায়াত করবে।
জরুরি পরিসেবা-কৃষি উপকরণ, খাদ্যশস্য পরিবহন, কোভিড টিকা, ত্রাণ বিতরণ, বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মী, ইন্টারনেট লাইন সংযোগ সংশ্লিষ্টরা লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবেন। জেলা প্রশাসক সবাইকে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য বিশেষভাবে আহবান জানান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, বর্তমানে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার অনেক মানুষ সর্দি জ্বরে আক্রান্ত হলেও করোনা আতঙ্কে নমুনা পরীক্ষা না করিয়ে অসুস্থ শরীরইে অবাধে চলাচল করায় দ্রুত করোনা ছড়িয়ে পড়ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সচতেনতার অভাবেও এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে জানান স্বাস্থ্য বিভাগের এই র্কমর্কতা।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫৯ জনের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ৪৯ জন, শিবগঞ্জে তিন, গোমস্তাপুরে ছয় ও ভোলাহাটে একজন রয়েছেন। বর্তমানে জেলায় সংক্রমণের হার ৫৫ ভাগের উপরে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে জেলার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ১৯ জন করোনা রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট ১২৭৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২১
আরএ