রাজশাহী: ভারত সীমান্ত ঘেঁষা চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর এবার রাজশাহীতে হু হু করে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাতজনের শরীরে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের পর এরই মধ্যে তার কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে গেছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার (৩১ মে) দুপুরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোববার (৩০ মে) সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ওয়ার্ড ও আইসিইউতে তাদের মৃত্যু হয়।
তারা চারজনই করোনা পজিটিভ ছিলেন। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে রামেক হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ৫৫ জনের মৃত্যু হলো। যার মধ্যে ২৭ জন করোনা পজিটিভ। বাকি ২৮ জন করোনা উপসর্গ নিয়েই মারা গেছেন।
রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, মাত্র একদিনের ব্যবধানে রাজশাহীতে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা হঠাৎই বেড়েছে। তাই সরকারি বিধিনিষেধ আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়নের প্রয়োজন এখনই। এর পাশাপাশি জনসচেতনতায় প্রশাসনিক কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। আর রাজশাহীসহ সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার প্রকোপ রুখতে ‘বিশেষ’ লকডাউন জরুরি বলেও মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, সোমবার (৩১ মে) সকাল পর্যন্ত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও আইসিইউতে ২০৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যার মধ্যে পজিটিভ রোগী ৮২ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে। নতুন ৩৭ জনই করোনা পজিটিভ রোগী। এর মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ১৬ জন। বাকিরা করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন।
আর ৩৭ জন করোনা রোগীর মধ্যে রাজশাহীরই ১৯ জন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাত্র ৯ জন। এছাড়া চিকিৎসাধীন ২০৫ জন রোগীর মধ্যে রাজশাহীরই ৯২ রয়েছেন। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৮৭ জন। অর্থাৎ চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর এবার রাজশাহীতে করোনার প্রকোপ বেড়েছে। সারাদেশে ১৩ জনের শরীরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাতজনের মধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। তারা তো কেউ হাসপাতালে ভর্তির আগে বসেছিলেন না। তাদের মাধ্যমে এরই মধ্যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনও শুরু হয়েছে। তাই এ মুহূর্তে রাজশাহীতে ‘বিশেষ’ লকাউন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
এদিকে, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগী আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় বেড সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে আইসিইউ বেডও। করোনা ইউনিটে মোট বেড সংখ্যা ২০০ থেকে এখন ২৩২টি করা হয়েছে। এছাড়া করোনা ইউনিটের জন্য ১৫টি আইসিইউ বেড ছিল। সেটি বাড়িয়ে ১৮টি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আরও ৩০ জন চিকিৎসকের চাহিদা স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠিয়েছে রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২১
এসএস/ওএইচ/