রাজশাহী: করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে রাজশাহী মহানগরীতে গত শুক্রবার (১১ জুন) থেকে ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। মহানগরীতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। মারা যাওয়াদের বেশিরভাগই ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের ৪০ শতাংশই গ্রামাঞ্চলের বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। তাই রাজশাহী মহানগরীতে করোনার বিস্তার ঠেকাতে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও বিধিনিষেধ আরোপের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
লকডাউনের সুফল পেতে অন্তত ১৪ দিনের লকডাউনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এ নিয়ে বুধবার (১৬ জুন) জেলা প্রশাসনের এক জরুরি বৈঠক হবে। সেখানেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় চিকিৎসকরা বলছেন, করোনার সংক্রমণ এখন শুধু শহরেই নয়, গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। তাই বাড়ছে আক্রান্তের হার, বাড়ছে রোগী ভর্তির সংখ্যাও। প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী আসছেন। মঙ্গলবারও (১৫ জুন) হাসপাতালে নতুন ৫৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, মৃতদের বেশিরভাগই ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে বয়স্ক মানুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তরুণদের মৃত্যুর হারও। রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটসহ মোট ১৩টি ওয়ার্ডে চলছে করোনা রোগীর চিকিৎসা। প্রস্তুত করা হচ্ছে আরও একটি ওয়ার্ড। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কাছে চাওয়া হয়েছে আরও ১৫ জন চিকিৎসক। তবে করোনা রোগী যেভাবে বাড়ছে তাতে তাদের চিকিৎসা দিতে প্রচণ্ড বেগ পেতে হচ্ছে। এভাবে রোগী বাড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে। তখন সামাল দেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন হাসপাতাল পরিচালক।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আব্দুল জলিল জানিয়েছেন, সংক্রমণ ঠেকাতে বুধবার (১৬ জুন) জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে এই সাত দিনের সংক্রমণের হার এবং করোনার সংক্রমণের সার্বিক পরিসংখ্যান তুলে ধরা হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ‘বিশেষ লকডাউন’ বাড়ানো হবে কি না তা বিবেচনা করা হবে বলেও উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২১
এসএস/এমআরএ