রাজশাহী: রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ জন করোনা পজেটিভ ছিলেন, বাকিরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বুধবার (১৬ জুন) সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টার মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা মারা যান। মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর আটজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চারজন ও কুষ্টিয়ার একজন রয়েছেন। এ নিয়ে চলতি মাসের এই ১৬ দিনে (১ জুন সকাল ৬টা থেকে ১৬ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মোট ১৬১ জনের মৃত্যু হলো।
মৃতদের বেশিরভাগই ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে বয়স্ক মানুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তরুণদের মৃত্যুর হারও। রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটসহ মোট ১৩টি ওয়ার্ডে চলছে করোনা রোগীর চিকিৎসা। প্রস্তুত করা হচ্ছে আরও একটি ওয়ার্ড। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কাছে চাওয়া হয়েছে আরও ১৫ জন চিকিৎসক। তবে করোনা রোগী যেভাবে বাড়ছে তাতে তাদের চিকিৎসা দিতে প্রচণ্ড বেগ পেতে হচ্ছে। এভাবে রোগী বাড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে। তখন সামাল দেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন হাসপাতাল পরিচালক।
জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৮ জন। বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩৪৪ জন। অথচ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে শয্যা সংখ্যা ২৭১টি। অর্থাৎ শয্যা সংখ্যার অতিরিক্ত করোনা রোগী এখন রামেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
রাজশাহীতে মঙ্গলবার দুইটি ল্যাবে ১৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৮৫ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ৪৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
এদিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আব্দুল জলিল জানিয়েছেন, সংক্রমণ ঠেকাতে বুধবার (১৬ জুন) জরুরি বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে ১১ জুন থেকে দেওয়া বিশেষ লকডাউনের মধ্যে এক সপ্তাহের সংক্রমণের হার এবং করোনার সংক্রমণের সার্বিক পরিসংখ্যান তুলে ধরা হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় 'বিশেষ লকডাউন' আরও বাড়ানো হবে কীনা তা বিবেচনা করা হবে বলেও উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৮ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২১
এসএস/আরএ