যশোর: যশোরে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েও করোনা সংক্রমণের লাগাম টানা যাচ্ছে না। বিধিনিষেধের ১৬তম দিনেও ২৪ ঘণ্টায় ৬০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ জুন) যশোর সিভিল সার্জন সূত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যশোরে বর্তমানে ৩ হাজার ৫০৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
এরমধ্যে করোনা ডেডিকেটেড যশোর জেনারেল হাসপাতালে ৮১ জন ও অন্যরা নিজ নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রতিদিনই হাসপাতালে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শয্যা বাড়িয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আরিফ আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তির চাপ কমেনি। গত ১০ দিন ধরে একই রকম অবস্থা। প্রতিদিনই হাসপাতালের করোনা রেড ও ইয়োলো জোনে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। রোগিী চাপ কমার কোনো লক্ষণ দেখছি না।
সিভিল সার্জন কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় যশোরে ৬০১ জনের নমুনা পিসিআর ল্যাব ও অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা করে ৩৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার সংক্রমণের হার ৬১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঁচজন ও করোনা ইউনিটে একজন, খুলনার গাজী মেডিক্যালে কেশবপুর উপজেলার একজন বাসিন্দা, অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও মনিরামপুরে বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু’জনের মৃত্যু হয়। যা সম্প্রতি সময়ে ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু। করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানতে যশোরে টানা তিন সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। গত ৯ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত এলাকাভিত্তিক বিধিনিষেধ আরোপ করা করা। এতে সংক্রমণ না কমায় গোটা জেলাজুড়ে আরো সাত দিনের বিধিনিষেধ আরোপ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিধিনিষেধের ১৬তম দিনেও সংক্রমণের গতি কমেনি বরং বেড়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বাংলানিউজকে বলেন, যশোরে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন গ্রাম পর্যায়েও মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। সংক্রমণের এখন পিক বা ঊর্ধ্বগতির সময় চলছে। যে কারণে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েও সংক্রমণের লাগাম টানা যাচ্ছে না। সংক্রমণ কমতে সময় লাগবে। তবে লকডাউন বা বিধিনিষেধসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করে যেতে হবে।
এদিকে শুক্রবার শহর ঘুরে দেখা গেছে, যশোর শহরে লোকজনের চলাচল একেবারেই কম। নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদিখানা আর ওষুধের দোকান বাদে সবধরনের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এমনকি রিকশা পর্যন্ত চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। শহরের খাজুরা বাসস্ট্যান্ড, দড়াটানা মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যে ব্যারিকেড দিয়ে মানুষের চলাচল সীমিত করার চেষ্টার করছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকেরা। এতে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের রোজগারও কমেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২১
ইউজি/আরবি