ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনায় মৃত্যু কমছে রামেক হাসপাতালে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২১
করোনায় মৃত্যু কমছে রামেক হাসপাতালে

রাজশাহী: করোনায় মৃত্যু ও রোগী কমছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। গত প্রায় তিন মাস ধরে করোনাজনিত কারণে প্রতিদিন গড়ে ১৮ থেকে ২০ জনের মৃত্যু হতো।

গত ১৪ জুলাই সকালেও ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

বর্তমানে সেই মৃত্যুর সংখ্যা ৯ থেকে ১৩ জনের মধ্যে নেমে এসেছে। এর মধ্যে গত ১১ আগস্ট ১০ জন, ১২ আগস্ট ৯ জন, ১৩ আগস্ট ১৩ জন এবং ১৪ আগস্ট ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। এই চার দিনের পরিসংখ্যান বলছে, করোনাজনিত কারণে রামেক হাসপাতালে মৃত্যুর সংখ্যা কমছে।

আর মৃত্যুর সংখ্যা কমার পাশাপাশি কমছে ভর্তি ও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ২৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৪ জন।

শনিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটের ৫১৩টি শয্যার বিপরীতে ভর্তি ছিলেন ৩৩০ জন রোগী। ১৮৩টি শয্যাই ছিল খালি। রাজশাহী জেলায় বর্তমানে করোনা সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৫২ শতাংশ।

এদিকে, রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চলতি মাসের প্রথম ১৪ দিনে ২০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জুলাই মাসে মারা গেছেন ৫৩১ জন। আর জুনে মারা গেছেন ৪০৫ জন। হাসপাতালের প্রতিদিনের মৃত্যুর হিসেবে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে রাজশাহীর রোগীর সংখ্যাই বেশি ছিল।

তবে উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ হাসপাতালটিতে রাজশাহী ছাড়াও অন্য জেলার রোগীরাও প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছেন। এর মধ্যে নাটোর, নওগাঁ, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও জয়পুরহাটসহ আরও অনেক জেলার রোগীরা এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। করোনা মহামারিতে যেসব জেলায় আইসিইউ বা ভেন্টিলেশন সুবিধা নেই, সেই জেলার সদর হাসপাতালের মুমূর্ষু রোগীদের পাঠানো হচ্ছে এই হাসপাতালে।

হঠাৎ রোগীর সংখ্যা বাড়ায় গত এপ্রিল থেকে রামেক হাসপাতালে করোনা ডেডিকেটেড ওয়ার্ড ও বেডের সংখ্যা বাড়ানো হয়। রোগীর চাপ সামালাতে হাসপাতাল  কর্তৃপক্ষ করোনা ওয়ার্ডের সংখ্যা বাড়িয়ে একটি একটি ওয়ার্ড করে ১৪টি ওয়ার্ডকে করোনা ডেডিকেটেড ওয়ার্ডে রূপ দেয়। ৫১৩টি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এ এফ এম আঞ্জমান আরা বেগম বলেন, রাজশাহী মহানগরে কিছুদিন আগেও শনাক্তের হার বেশি ছিল। এখন কিন্তু শনাক্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে। র‌্যাপিড টেস্টে মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ পজেটিভ হচ্ছে। ফলে মহানগরেও শনাক্তের হার কমতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় সিটি করপোরেশন এলাকা করোনার প্রথম সংক্রমণের সময় এক মাস করোনামুক্ত রাখা সম্ভব হয়েছিল। এখন আবারও সেই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকা প্রদানের পাশাপাশি সর্বাত্মক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলার জন্য সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণাও চলছে।

জেলা করোনা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল বলেন, বিধিনিষেধ শিথিল হলেও সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আগের মতোই ভ্রাম্যমাণ আদালতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে জেলা প্রশাসন তা করতে চায় না। সবাই নিজ থেকেই সচেতন হবেন এটাই প্রত্যাশা। নিজের ও পরিবারের জন্য এটা খুবই জরুরিও। বর্তমানে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে আবারও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২১
এসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।