বাগেরহাট: প্রতিদিনই বাগেরহাটের হাসপাতালে আশঙ্কাজনক হারে শিশুরোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গেল ৩০ দিনে জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ছয় হাজারের অধিক শিশু বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার কারণে ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ২৪ শয্যার বিপরীতে ৫৪ জন শিশু চিকিৎসাধীন।
জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিভাবকরা তাদের শিশুদের নিয়ে আসছেন চিকিৎসার জন্য। শয্যা সংকটে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে অনেক রোগী।
৭ মাসের সন্তান সিয়ামকে নিয়ে কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড থেকে হাসপাতালে এসেছেন হেলেনা বেগম। তিনি বাংলানিউজেক বলেন, ৫ দিন আগে আমার ছেলের খুব কাশি হয়। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে তাকে খাওয়াই। তাতে সে ভালো হয়নি। পরে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করতে বাধ্য হয়েছি।
হাসপাতালে ভর্তি ৫ মাস বয়সী শিশু আছিয়া, কথা হয় তার বাবার সঙ্গে। তিনি বলেন, ৪ দিন আগে ঠাণ্ডাজনিত কারণে শিশু আছিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করি। তার জ্বর ও ঠাণ্ডা ছিল। পরে জানতে পারি তার নিউমোনিয়া হয়েছে।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত একাধিক নার্স বললেন, রোগীদের চাপ অনেক বেশি। মেঝে ও বারান্দায়ও চিকিৎসা নিচ্ছে অনেকে। কষ্ট হলেও আমরা তাদের প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছি। রোগীর পাশাপাশি তাদের স্বজনদের চাপও বেশি। ফলে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু) ডা. শিহান মাহমুদ বলেন, এখন হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত শিশু রোগীর সংখ্যা বেশ বেড়েছে। হঠাৎ করে আবহাওয়ার পরিবর্তন, মাঝেমধ্যে বৃষ্টি, গরম থাকায় শিশুরা দ্রুত ঘেমে যায়। ওই ঘাম থেকে সংক্রমণটা হয় সবচেয়ে বেশি। বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মিরাজুল করীম বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী হওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। মূলত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেই হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। হঠাৎ আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত এক মাসে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রায় ৬ হাজার শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। এছাড়া হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে ২৪ শয্যার বিপরীতে এখন চিকিৎসাধীন আছে ৫৪ শিশু। এমন অবস্থায় অভিভাবকদের সচেতন ও পাশাপাশি শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি ।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২১
এএটি