ঢাকা: জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে বুক না কেটে হৃদপিণ্ডে ট্রান্স ক্যাথেটার অ্যাওর্টিক ভালভ রিপ্লেসমেন্ট (টিএভিআর) পদ্ধতিতে পুরনো অ্যাওর্টিক ভালভের ভেতরে নতুন ভালভ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
গত রোববার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার প্রদীপ কুমার কর্মকারের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক বুকে না কেটে টিএভিআর পদ্ধতিতে পুরনো অ্যাওর্টিক ভালভের ভেতরে নতুন ভালভ প্রতিস্থাপন করেন।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।
৭৫ বছর বয়সী একজন সাবেক সচিবের হার্টের অ্যাওর্টিক ভালভ সরু হওয়ার কারণে ২০১১ সালে তার বুক কেটে অ্যাওর্টিক ভালভ প্রতিস্থাপন করা হয়। গত কয়েক মাস যাবত তিনি হাঁটলে শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন এবং সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করতে পারেন না। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা যায়, তার অ্যাওর্টিক ভালভ পুনরায় সরু হয়ে গেছে। এর ফলে হাঁটলে তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন।
এ রোগের চিকিত্সা হিসেবে আবার তাকে বুক কেটে অ্যাওর্টিক ভালভ প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি দ্বিতীয়বার বুক কেটে অ্যাওর্টিক ভালভ প্রতিস্থাপন করতে রাজি ছিলেন না।
পরবর্তীতে বিকল্প চিকিৎসার সন্ধান করতে গিয়ে তিনি খোঁজ পান জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকারের। তিনি টিএভিআর পদ্ধতিতে বুক না কেটে, বুকের হাড় না কেটে পুরনো অ্যাওর্টিক ভালভের ভেতরে নতুন ভালভ সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেন।
সাধারণত বুক কেটে ভালভ প্রতিস্থাপন করলে ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই এটি আবার তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে এবং বেশির ভাগ রোগী পরবর্তীতে দ্বিতীয় বারের মতো বুক কেটে ভালভ প্রতিস্থাপনে রাজি হন না। যারা সামর্থ্যবান তারা দেশের বাইরে অনেক টাকা খরচ করে টিএভিআর পদ্ধতিতে বুক না কেটে এই অপারেশন করেন।
অধ্যাপক প্রদীপ কুমার বলেন, বুক এবং বুকের হাড় না কেটে টিএভিআর পদ্ধতিতে অ্যাওর্টিক ভালভ প্রতিস্থাপনে এক ঘণ্টার মতো সময় লাগে। রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় না, রোগী তিনদিন পরে হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে যেতে পারেন এবং সাতদিনের মধ্যে কাজে যোগ দিতে পারেন। এই সুবিধার কারণে সারাবিশ্বে টিএভিআর পদ্ধতিতে বুক না কেটে অ্যাওর্টিক ভাল্ভ প্রতিস্থাপন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
আরকেআর/এমজেএফ