ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সম্ভাব্য রূপরেখা

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৪ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৮
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সম্ভাব্য রূপরেখা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)।

কলকাতা: আগামী ২৫ মে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনির্মিত ‘বাংলাদেশ ভবন’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে যোগ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। থাকতে পারেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

গত বছরের পর এ দিনটিতে এই তিনজনের একত্রিত হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতি হয়ে উঠেছে সরগরম।

শেখ হাসিনার সফরসূচি নিয়ে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপদূতাবাস জানায়, বাংলাদেশ ভবন ও আসানসোলে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় বাদে সম্পূর্ণ সফরসূচি ঢাকা থেকে তারা পায়নি।

তাই এ বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু জানাতে পারবে না।

তবে দুই প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য সফর নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনের তৎপরতা দেখে ও সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে যা জানা যাচ্ছে তা হলো- ২৫ মে কলকাতা বিমানবন্দরে পৃথক সময়ে অবতরণ করবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে হেলিকপ্টার করে পৃথকভাবে শান্তিনিকেতন যাবেন তারা।

সেখানে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করবেন দুই প্রধানমন্ত্রী। তারা সময় দেবেন বিশ্বভারতী বিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানেও। এরপর মধ্যাহ্নভোজ শেষে রুদ্ধদ্বারে দেশের সমস্যা নিয়ে হবে একান্ত বৈঠক। সেখানে দুই রাষ্ট্রের প্রধান ছাড়া তৃতীয় কারও না থাকার সম্ভাবনা বেশি। সম্ভবত শান্তিনিকেতনে যোগ নাও দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পরে সেদিনই কলকাতায় ফিরে আসবেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে তিনি যাবেন নেতাজী ভবনে। সেই রাত থাকবেন কলকাতায়ই। অপরদিকে, বিশ্বভারতী থেকে সরাসরি ফিরে যাবেন নরেন্দ্র মোদী।

পরদিন ২৬ মে আসানসোলে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তাকে দেওয়া হবে ডিলিট সম্মাননা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর হেলিকপ্টারে আসানসোল থেকে ফিরবেন কলকাতা। ফিরেই সেখান থেকে যাবেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মভিটা জোড়াসাঁকোতে। পরে কলকাতাতেই ইফতার শেষ করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী।

দুই রাষ্ট্র নায়কের শান্তিনিকেতনে একান্ত আলাপচারিতায় যে বিষয় দু’টি বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে তা হলো- পানিবণ্টন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘ টানাপোড়েন। বাংলাদেশ তিস্তার ন্যায্য হিস্যা পেতে নয়াদিল্লির সঙ্গে সমঝোতা করতে চাইলেও বারবার তাতে বাধ সাধছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া সম্প্রতি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ আরও বেড়েছে ঢাকার। রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন জোরালোভাবে নিশ্চিত করাই থাকতে পারে বৈঠকের মূল লক্ষ্য।

এ বিষয়ে কলকাতার অধ্যাপক ইমানুল হক বাংলানিউজকে বলেন, তিস্তা বাংলাদেশের ন্যায্য প্রাপ্তি ও রোহিঙ্গারা যাতে নিজ বাসভূমি ফিরে পান এবং স্বমর্যাদায় তারা নিজের দেশে বাস করতে পারেন। তাই  বৈঠকের জন্য শান্তিনিকেতনকে বেছে নেওয়া খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তবে দুই দেশের মধ্যে আরও শান্তি ফিরে আসাটা খুবই জরুরি, এও উল্লেখ করেন তিনি।  

একই জের টেনে কলকাতার সাংবাদিক মোহাম্মদ সাদউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, তিস্তা চুক্তির জন্য ভারত সরকার রাজি থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজি না হওয়ার কারণে বারবার পিছিয়েছে এটি। তবে আমি মনে করি, পশ্চিমবঙ্গে যে সরকার ক্ষমতায় থাকুক না কেনো, তিস্তা চুক্তি হওয়াটা দরকার। এর ফলে দুই দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আমি মনে করি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫১ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৮
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।