ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩৮৪৩ ভারতীয় সেনার স্মৃতিরমিনারে

হুসাইন আজাদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৯
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩৮৪৩ ভারতীয় সেনার স্মৃতিরমিনারে ইন্ডিয়া গেট/ছবি: বাংলানিউজ

নয়াদিল্লি থেকে: মধ্যাহ্নভোজ শেষে বাস যখন বিকেলের রোদে ইন্ডিয়া গেট এলাকায় ঢুকলো, সবাই দূর থেকেই স্মার্টফোনে ক্লিক করতে থাকলো নজরকাড়া এ স্থাপনাকে। ফাল্গুনী পাঠকের 'আইয়ো রামা...' মিউজিক ভিডিওতে প্রথম যারা ইন্ডিয়া গেট দেখেছিল, তাদের যেন নস্টালজিয়ায় পেয়ে বসলো। এই সেই ইন্ডিয়া গেট, যা কেবল দিল্লির নয়, পুরো ভারতবর্ষের প্রতিনিধিত্ব করে।

ব্রিটিশ আমলে ১৯২১ সাল থেকে প্রায় ১০ বছর ধরে নির্মিত হয় যুদ্ধস্মৃতির মিনার ইন্ডিয়া গেট। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ হারানো প্রায় ৯০ হাজার সৈন্যের স্মরণে গড়ে তোলা সৌধ ৪২ মিটার উঁচু।

লাল ভরতপুর পাথরের ওপর এ স্থাপনায় গ্রানাইড ও বালিপাথরও ব্যবহার করা হয়েছে। উপরে ওঠার সিঁড়ি থাকলেও সেটি এখন বন্ধ। গেটের চূড়ায় বড় করে লেখা ইন্ডিয়া ও ভারত। খিলানের গায়ে খোদাই করা ১৩ হাজারের বেশি ব্রিটিশ ও ভারতীয় সৈন্যের নাম।  

এই সৌধ ঘিরে পরে নির্মিত হয় 'ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল'। ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন হয় এই মেমোরিয়াল।

...ইতিহাস-ঐতিহ্য ছাপিয়ে পর্যটনের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠা ইন্ডিয়া গেটের আশপাশ তখন স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত। ভারতের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে সাত দিনের সফরে আসা বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টিমকে মেমোরিয়ালে ঢোকার আগে সংক্ষিপ্ত ব্রিফ দেন এই সৌধ কমপ্লেক্সের গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ আর এন শর্মা।

তার ভাষ্যে, ইন্ডিয়া গেট ছাড়াও এই মেমোরিয়ালে চারটি চক্র রয়েছে। এ চার চক্র হলো- অমর চক্র, বীরত্ব চক্র, ত্যাগ চক্র ও রক্ষক চক্র। চারটিকে একত্রে বলা হয় চক্রব্যূহ।  দেশমাতৃকার জন্য ত্যাগ স্বীকার করা ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অবদান স্মরণে এই  চক্রব্যূহ গড়ে তোলা হয়েছে।  

যুদ্ধে নিহত সৈন্যদের নামইন্ডিয়া গেটের একেবারে পাশে যাওয়ার আগে ক্যাপ্টেন শর্মা বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের নিয়ে যান এর পেছনে 'অমর জওয়ান জ্যোতি'র সামনে। অনেকেই তখনো জানেন না এই 'অমর জওয়ান জ্যোতি' কী।

ক্যাপ্টেন শর্মা এ নিয়ে ব্রিফ করেন ডেলিগেটদের। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যে ৩ হাজার ৮৪৩ সেনা প্রাণ দিয়েছিলেন, তাদের স্মরণে এই 'অমর জওয়ান জ্যোতি'। একটি বাতি এখানে জ্বলে ২৪ ঘণ্টা। এই অমর জওয়ান জ্যোতি নির্মিত হয় মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের পর।

উৎসবের আমেজে থাকা বাংলাদেশের ডেলিগেটরা তখন খানিকটা গম্ভীর হয়ে পড়লেন যেন। শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় যেন অবনত হয়ে পড়লো শিয়র। ডেলিগেট টিমের সমন্বকদের আহবানে সবাই গ্রুপ ছবি তুললেন চিরঋণের সাক্ষী 'অমর জওয়ান জ্যোতি'র সামনে।

এর পর ডেলিগেটরা ইন্ডিয়া গেটের দিকে এগোলেও মন যেন পড়ে থাকছিলো পেছনে। ভ্রাতৃত্বের বন্ধনই যে টানে শেকড়ে।

আরো পড়ুন:
***মোহনীয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর জয়গান
*ভারতের সংসদে বাংলাদেশের শতযুবা
** মেঘের রাজ্যে মাথা উঁচিয়ে হঠাৎ হিমালয়
** নয়াদিল্লি পৌঁছেছে বাংলাদেশের শতযুবা
** ভারতের পথে ১০০ ‘বাংলাদেশি-বন্ধু’ 
** ১০০ ‘বাংলাদেশি-বন্ধু’ ভারত যাচ্ছে বৃহস্পতিবার
** ভারত যাচ্ছে আরও ‘১০০ বাংলাদেশি-বন্ধু’​
**২৫শ বছরের ইতিহাসের জাদুঘরে বাজছে 'কারার ওই লৌহ কপাট'

বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৯
এইচএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।