ব্যবসায়ীরা জানান, মাসখানেক আগেও প্রতি বস্তা (৭৪ কেজি) লবণ বিক্রি হয়েছে এক হাজার টাকায়। কোরবানির ঈদ এগিয়ে আসার সপ্তাহখানেক আগে একই পরিমাণ লবন বিক্রি হয় ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়।
গত বছর কোরবানির ঈদের আগে একই পরিমাণ লবন বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকায়। ঈদের একদিন আগ থেকে সেই লবণ ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেচা-কেনা হয়। সে হিসেবে গতবারের চেয়ে এবার বস্তাপ্রতি লবণ ৩০০-৫০০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
তার ওপরে কোরবানির ঈদের আগ থেকেই মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন। এসব ব্যবসায়ীর গুদামে পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও বাজারে চাহিদামতো লবণ মিলছে না বলেও অভিযোগ চামড়া ব্যবসায়ীদের।
এরই মধ্যে চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে। দেড় লাখ টাকা মূল্যের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৪০০ টাকায়। সর্বোচ্চ মানের বড় আকারের চামড়া বিক্রি হয়েছে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। একটু নিম্নমানের চামড়া হলেই দাম হয়ে যাচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা। ছাগলের চামড়া রকমভেদে ৫০-৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
চামড়ার এই ধসের বাজারেও চড়া দামে কিনতে হচ্ছে লবণ ও শ্রম। ২০০ টাকার শ্রমিককে ৪০০ টাকা দিতে হচ্ছে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে।
মঙ্গলবার (০৫ সেপ্টেম্বর) বগুড়া শহরের ঐতিহ্যবাহী রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজার ও টিনপট্টি এলাকায় গেলে এসব অভিযোগ তোলেন চামড়া ব্যবসায়ীরা।
পাইকারি-খুচরা লবণ ব্যবসায়ীদেরও অভিযোগ, প্রত্যেক কোরবানির ঈদের আগেই কিছু বড় ব্যবসায়ী বাড়তি লাভ করতে অনেক বেশি লবণ কিনে গুদামজাত করেন। গুদামে থাকার পরও তারা গিয়ে সে লবণ পান না। তবে চাহিদামতো বেশি দাম দিতে রাজি হলেই গুদাম থেকে লবণের বস্তা বের হয়ে আসে।
রেজাউল করিম, পটু মিয়া, নজরুল ইসলাম ও মিলন হোসেনসহ বেশ কয়েকজন চামড়া ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। কিছু মুনাফালোভী ব্যবসায়ী কোরবানির ঈদের আগে লবণ কিনে গুদামজাত করে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করেন। এবারো সেই ব্যবসায়ীরাই একই কাজ করায় বাজারে লবণের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে’।
‘এবার চামড়া কিনে এমনিতেই ব্যাপক ধরা খেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এর ওপরে লবণের মাত্রাতিরিক্ত দাম বাড়ার পাশাপাশি চাহিদামতো পাওয়া যাচ্ছে না’।
তবে হায়দার আলী, আব্দুল মান্নান ও সুমির কুমারসহ বেশ কয়েকজন লবণ ব্যবসায়ীর দাবি, ‘কোরবানির ঈদের আগে থেকেই বিভিন্ন মোকামে লবণের দাম বাড়তে শুরু করে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তাদেরকেও বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। এমনকি বাড়তি দাম দেওয়ার পরও চাহিদামতো লবণ মিলছে না’।
ফলে গুদামজাত করে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির খবর সঠিক নয়। তারা বেশি দামে কিনে আনছেন মোকাম থেকে। সেই লবণ বিক্রি করে আগের ধারাবাহিকতায় সীমিত লাভ করছেন বলেও দাবি এসব ব্যবসায়ীর।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৭
এমবিএইচ/এএসআর