ঢাকা: অবশেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির(একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটিলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্প।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়।
এছাড়া একনেক সভায় মোট ৪ হাজার ২৯৬ কোটি ৬৩ টাকার ৬টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদিত ৭টি প্রকল্পই নতুন। অনুমোদিত প্রকল্প ৬টির প্রাক্কলিত মোট অর্থের মধ্যে জিওবি এক হাজার ৯২৮ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা, প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ৩৬৩ কোটি ৭ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫ কোটি টাকা।
সভাশেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, উপকেন্দ্র না থাকার জন্য টিভি মালিকদের প্রতিবছর ১১০ কোটি টাকা বিদেশী রাষ্ট্রগুলোকে ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রতিবেশী দেশ থেকে আমরা আয় করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সাল থেকে প্রকল্পের কথা বলে আসছিল। অবশেষে প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অর্থায়নের ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে আমরা আশা করছি এ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য আমেরিকা, রাশিয়া ও ফ্রান্স এগিয়ে আসবে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জুলাই-২০১৪ থেকে জুন-২০১৭ পর্যন্ত। ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে জিওবি ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা এবং সংস্থার প্রকল্প সাহায্য ১ হাজার ৬৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
এ প্রকল্পের আওতায় টেলিকমিউনিকেশন ও ব্রডকাস্টিং সেবা দিতে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করা হবে। ফলে সম্প্রচার ব্যয় বাবদ বছরে ১১০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়ী হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ১২০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাল ধরা হয়েছে জুলাই-২০১৪ থেকে জুন-২০১৭ পর্যন্ত। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৭৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। প্রাক্কলিত মোট ব্যয়ের মধ্যে জিওবি ২৬৫কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৭১০কোটি ৬৩ লাখ টাকা। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
এ প্রকল্পের আওতায় ১২০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ করা হবে। মোট ১২০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচের মধ্যে এসি স্লিপার কার ১৭ টি, এসি চেম্বার কার ১৭টি, নন-এসি শোভন ক্যারেজ ৬৭টি এবং এসি জেনারেটর কাম প্রার্থনা কক্ষ ১৯টি। এ প্রকল্পের উন্নয়ন সহযোগী ভারত সরকার।
ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জুলাই-২০১৪ থেকে জুন-২০১৯ পর্যন্ত। মোট ব্যয় ধরা হয়েছ ২০৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।
এ প্রকল্পের আওতায় নেত্রকোনা,গোপালগনজ,খুলনা,ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও গাইবান্ধায় ৫টি ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি স্থাপন করা হবে।
অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার রোধ, বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমানো এবং অগ্রিম বিদুৎ বিল আদায়ের উদ্দেশ্যে খুলনা শহরের জন্য প্রি-পেমেন্ট মিটারিং (১ম পর্যায়) প্রকল্পেরর বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জুলাই-২০১৪ থেকে জুন-২০১৬ পর্যন্ত। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়ছে ৪২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। যার মধ্যে জিওবি ৩৭ কোটি ৪০ লাখ এবং সংস্থার নিজন্ব অর্থায়ন ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ, ভারত ও ভূটানের মধ্যে আমদানি-রপ্তানিযোগ্য পণ্য সামগ্রী গুদামজাত সুবিধাসহ হ্যান্ডলিং সুবিধা উন্নয়নের লক্ষ্যে তামাবিল স্থল বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জুলাই-২০১৪ হতে জুন-২০১৭ পর্যন্ত। ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
এছাড়া ৩৩ কোটি টাকা সরকারী ব্যয়ে নিমগাছি সমাজভিত্তিক মৎস্য চাষ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আজকের সভায় উপস্থিত ছিলেন- পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদমন্ত্রী মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ. মান্নান, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
** শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য ও প্রযুক্তি মেলা
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪