ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

‘২০২৫ সালে আইটি শিল্পে রপ্তানি ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২০
‘২০২৫ সালে আইটি শিল্পে রপ্তানি ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে’

ঢাকা: ২০২৫ সালে আইটি শিল্প রপ্তানি ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। 

তিনি বলেছেন, এখন আইটি খাত বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি। ২০১৮ সালেই আমরা এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানি বাজার পার করেছি।

আগামী ৫ বছরে ৫ বিলিয়ন ডলারের বাজার হবে এ খাত।  

শনিবার (১৪ মার্চ) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড মিলনায়তনে কালের কণ্ঠ-সিটিও ফোরাম আয়োজিত ‘দেশীয় কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার শিল্পের উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।  

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রযুক্তির কল্যাণে ব্যাংকিং সেবা বদলে গেছে। এখন টুইটার, ভাইভার ও হোয়াটসঅ্যাপেও ব্যাংকিং কার্যক্রম হচ্ছে। পুরো ব্যাংকিং সেবা এখন হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। এখন দেশীয় আইটি উদ্যোক্তাদের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করার সময় এসেছে। যাতে কর্মক্ষেত্রে না গিয়েও কাজ চলে।  

তিনি বলেন, গত ১১ বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৫৬ লাখ থেকে ১০ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল স্থপতি সজীব ওয়াজেদ জয়।  

‘ইন্টারনেট যদি জনগণের কাছে পৌঁছে না দিতে পারতাম, তাহলে সেটা সম্ভব হতো না। এক্ষেত্রে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের উদ্যোগগুলো বেশ প্রশংসাযোগ্য। ’ 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ অগ্নিঝরা ভাষণ দিয়েছিলেন। অনুপ্রেরণাকারী হয়ে থাকবে বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ। সেই ভাষণে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা ছিলো।  

গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থিত আলোচকরা।  ছবি: ডিএইচ বাদল/বাংলানিউজ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয় সিলেবাসে ছিলো না। এখন এ বিষয় সিলেবাসে যুক্ত হওয়ায় তরুণরা বিদেশমুখী হচ্ছে না। উপজেলায় বসেই কম্পিউটারে কাজ করতে পারছে। কেউবা আইটি ফার্ম করছে। উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে।  

‘গত ১০ বছরে আইটি কোর হয়েছে। একসময়  বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেও কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারতো না শিক্ষার্থীরা। আর এখন স্কুল লেভেলেই তা করছে। প্রোগ্রামিংয়ে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। এটি সম্ভব হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার পর। ’ 

পড়ুন>> ‘বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে বছরে ৫০০ কোটি টাকা পাচার’

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানিকে সহযোগিতা করবো। এজন্য যা করা দরকার, সবই করা হবে। ২০২৪ সাল পর্যন্ত আইটি খাতের সব ট্যাক্স মওকুফ করা হয়েছে। কেউ সফটওয়্যার রপ্তানি করলে ১০ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন। আমরা এ খাতে মাত্র হাঁটা শুরু করেছি। অনেক দূর যেতে হবে। দেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে কর্পোরেট ট্যাক্স যাতে কমিয়ে দেওয়া হয় এবং বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে যাতে ট্যাক্স বাড়িয়ে দেওয়া হয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো, লিখিত চিঠি দেবো।  

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১০০ অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করেছেন। এজন্য তার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আসুন আমরাও নিজ নিজ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১০০ কর্মঘণ্টা কাজ করি। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি সম্মান জানানো হবে।  

প্রত্যেক ট্র্যানজেকশন রিয়েল টাইমে করতে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, কোর ব্যাংকিং সেক্টর কত নিরাপদ করা যায়, দেশীয় সফটওয়্যার ব্যবহার করে, সেটাই করতে হবে। আমরা এখন একটা আইন প্রণয়নের দিকে যাচ্ছি- ডেটা প্রাইভেসি নিয়ে।  

‘একসময় আমরা পাকিস্তানি শোষকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এখন আর কেউ দেশ দখল করে না। এখন অনলাইনে ডাটা চুরি করছে। এটা আরেক যুদ্ধ। তাই এখন এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। ’ 

সঞ্চালকের বক্তব্যে কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, যে যার অবস্থান থেকে দেশের জন্য কাজ করে যেতে হবে। তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। তার প্রতি সম্মান জানানো হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে আস্থা রাখতে হবে। তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে।  

গোলটেবিল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কায়কোবাদ, সীমান্ত ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান, সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তপন কান্তি সরকার, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাকের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক কেএম মঞ্জুরুল হক, ট্রাস্ট ব্যাংকের হেড অব আইটি খন্দকার মেহবুবা, সীমান্ত ব্যাংকের হেড অব আইটি আশরাফুল আলম ভূঁইয়া, অগ্রণী ব্যাংকের সিআইটিও মাহমুদ হাসান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সিনিয়র অ্যানালাইসিস্ট মিজানুর রহমান, ফ্লোরা লিমিটেডের পরিচালক সেরোসা ইসলাম প্রমুখ।  

স্বাগত বক্তব্য রাখেন কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত  সম্পাদক মোস্তফা কামাল। আর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসিসের পরিচালক ও ফ্লোরা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক  মোস্তফা রফিকুল ইসলাম।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২০
টিএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।