ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ধর্ষণকাণ্ডে দিল্লির পর্যটন শিল্পে ধস!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৪
ধর্ষণকাণ্ডে দিল্লির পর্যটন শিল্পে ধস! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা কেবল বিশ্ব দরবারে ভারতের মাথা নতই করছে না, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনার পর দেশটিতে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমে গেছে বিস্ময়কর হারে। সর্বশেষ একটি জরিপ মতে, আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩০ শতাংশ পর্যটক হারিয়েছে দিল্লি।



প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দফরের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যম শুক্রবার এ তথ্য দিয়েছে।

সংবাদ মাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে কমনওয়েলথ গেমস আয়োজনের পর দিল্লিসহ গোটা ভারতে যে হারে পর্যটকের ‍আনাগোনা বেড়ে গিয়েছিল, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির চলন্ত বাসে এক মেডিকেল ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনার পর ঠিক তার চেয়েও অনেক বেশি গতিতে পর্যটকের আগমন কমতে থাকে।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বলছে, ইউনেস্কো ঘোষিত দিল্লির তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্য কুতুব মিনার, সম্রাট হুমায়ুনের সমাধি ও লাল কেল্লায় বিদেশি পর্যটকের টিকিট বিক্রি অনেক বেশি কমে গেছে ওই গণধর্ষণের ঘটনার পর।

পর্যটকের হার এভাবে কমে যাওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত দিল্লিসহ ভারতের পর্যটন বিভাগ।

যদিও ভারত সরকার মনে করছে, ধর্ষণের ঘটনার পাশাপাশি বিশ্বমন্দাও বিদেশি পর্যটক কমার অন্যতম কারণ।

তবে, এ ব্যাপারে জনসাধারণের ধারণা, মেডিকেল ছাত্রীকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনা ও তৎপরবর্তী আরও কিছু আলোচিত ধর্ষণের ঘটনা এবং ক’জন সাংবাদিক ও বিদেশি পর্যটককে যৌন হয়রানির ঘটনা দেশের পর্যটন শিল্পে ধস নামিয়েছে।

জনগণ মনে করছে, দিল্লির প্রাচীন স্থাপনাগুলোকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে কেন্দ্রীয় সরকার যখন অনেক বেশি বিনিয়োগ করছিল এবং এ সুবাদে ইউনেস্কো যখন খোদ দিল্লিকেই আগামী বছর বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করতে যাচ্ছে ঠিক তখনই ভারতের কেন্দ্রীয় রাজধানীকে ন্যাক্কারজনক ধর্ষণের ঘটনায় বিশ্ব কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলো

একটি বেসরকারি জরিপ বলছে, এখন কোনো বিদেশি নারী পর্যটক একা আসছেন না, তারা এলেও দলবদ্ধ হয়ে বেড়াতে আসছেন।

হিসাব বলছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে সম্রাট হুমায়ুনের সমাধির পর্যটক ছিল ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৭১৪। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ সংখ্যা ১০০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে দাঁড়ায় ১২ লাখ ২৫ হাজার ৪৮৪। কিন্তু ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সে সংখ্যা ২৯.৩ শতাংশ কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪৪১। ঠিক একইভাবে ২০১১-১২ অর্থবছরে কুতুব মিনারের পর্যটক ছিল ৩০ লাখ ৯১ হাজার ৬০৯, ২০১২-১৩ অর্থবছরে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ১৬২। আর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এ সংখ্যা কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৬।

কেবল বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থানগুলোই এমন ধসে পড়েনি। দিল্লির জন্তর মন্তর, পুরানা কিলা, সফদারজং সমাধির মতো প্রাচীন স্থাপনাগুলোও পর্যটক হারিয়েছে অপ্রত্যাশিত গতিতে।

তবে, দিল্লির চলন্ত বাসে ধর্ষণকাণ্ড বিদেশি পর্যটক কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখলেও ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এর মূল কারণ পশ্চিমা বিশ্বে মন্দা।

আরেক কর্মকর্তা অবশ্য অকপটে স্বীকার করেছেন, ভারতকন্যার ধর্ষণের ঘটনার পরই বিদেশি নারী পর্যটকরা দিল্লিকে এড়িয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।