ঢাকা: কেনিয়ার গারিসা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে হামলার ঘটনাকে ‘মানবতার ওপর হামলা’ মন্তব্য করে চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট উহুরু কেন্যাত্তা।
ন্যাক্কারজনক ওই হামলার ঘটনার দু’দিন পর শনিবার (৪ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
কেন্যাত্তা বলেন, গারিসা কলেজে হামলাসহ আমাদের ওপর যে কোনো হামলার বিরুদ্ধে প্রশাসন সম্ভাব্য সব ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, নিজেদের ও একে অপরের সঙ্গে সততা বজায় রাখার সময় এসেছে। যে মৌলবাদের কারণে সন্ত্রাস মাথাচাড়া দিচ্ছে, তা রাতের আঁধারে নয়, দিনের আলোতে সবার সামনেই সম্প্রসারিত হচ্ছে।
কেনিয়াবাসীর সহায়তা কামনা করে কেন্যাত্তা প্রতিশ্রুতি দেন, তার প্রশাসন আল-শাবাবকে সমূলে উৎখাত করবে।
প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেন, গারিসা কলেজে হামলার পেছনের পরিকল্পনাকারী ও অর্থ যোগানদাতারা আমাদের মধ্যেই মিশে আছে।
গত ২ এপ্রিল গারিসা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ক্যাম্পাসে হামলা চালায় চার শাবাব জঙ্গি। সোমালিয়ায় কেনিয়ার সামরিক হস্তক্ষেপ এবং কেনিয়ার ‘মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নাইরোবির নিপীড়নমূলক আচরণের প্রতিশোধ হিসেবে’ এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে আল-শাবাব।
এ হামলার ঘটনায় নিহত হয় ১৪২ জন শিক্ষার্থী। প্রাণ হারায় তিন পুলিশ ও তিন সেনা। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে মারা যায় চার হামলাকারীও।
জানা যায়, হামলা চালিয়ে বিশেষত অ-মুসলিম শিক্ষার্থীদের আলাদা করে গুলি করে হত্যা করে ঘাতকরা।
২০১১ সালে আফ্রিকান ইউনিয়নের সঙ্গে একযোগে সন্ত্রাসী সংগঠন আল-শাবাব মোকাবেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই কেনিয়ায় নিয়মিত জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটছে।
এর আগে, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে নাইরোবির একটি অভিজাত শপিং মলে সন্ত্রাসীদের হামলায় ৬৭ জন নিহত হয়।
তবে, দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে ১৯৯৮ সালে। সে বছর নাইরোবির মার্কিন দূতাবাসে বোমা হামলায় ২ শতাধিক মানুষ নিহত হয়।
এদিকে, গারিসা কলেজে হামলার পর কেনিয়ায় আবারও আক্রমণের হুমকি দিয়েছে আল-শাবাব। শনিবারই এক বিবৃতিতে কেনিয়ার শহরগুলোকে রক্তে লাল করে দেওয়ার হুমকি দেয় জঙ্গি সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোনো পূর্ব সতর্কতা কিংবা নিরাপত্তা ব্যবস্থাই তোমাদের নগরীতে আরও হামলা ও রক্তপাত ঠেকাতে পারবে না’।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৫
আরএইচ/এইচএ/