ঢাকা: গর্ভে আসার পর থেকেই অনাগত সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন বোনা শুরু হয়ে যায় মা-বাবার। সন্তান অনেক বড় হবে, বিশ্ব ইতিহাসে নাম লিখিয়ে সবার মুখ উজ্জ্বল করবে, আরও কত কত স্বপ্ন।
তেমনিভাবে যুক্তরাজ্যের টেডি হলস্টোন যখন পরপারে পাড়ি জমায়, তখন তার বাবা মাইক হলস্টোন ও মা জেস ইভানসও এমন শোকে মুষড়ে পড়েছিলেন। কিন্তু জন্মের পর একশ’ মিনিট বেঁচে থেকেই অমর হয়ে গেছে টেডি। সেইসঙ্গে মা-বাবাকে করে গেছে গর্বিত।
জেস ইভানস যখন ১২ সপ্তাহের অন্তসত্বা, তখনই হলস্টোন দম্পতি জানতে পারেন, তারা জমজ পুত্রসন্তানের জনক-জননী হতে চলেছেন। দু’জনের নামও ঠিক করে ফেলা হয় সেসময়। একজনের নাম হবে টেডি হলস্টোন, অপরজনের নোয়াহ হলস্টোন।
কিন্তু চিকিৎসক জানালেন, জমজ সন্তানের মধ্যে একজন বিরল ও মারাত্মক একটি সমস্যায় ভুগছে যা তার মস্তিষ্ক ও মাথার খুলি তৈরি হতে বাধার সৃষ্টি করছে।
ডাক্তাররা স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন, সমস্যাগ্রস্ত সন্তানটি জন্মের আগেই মারা যেতে পারে। তা না হলে জন্মের কিছুক্ষণ পরই মারা যাবে সে।
সেসময় থেকেই সন্তান হারানোর শঙ্কায় ভেঙে পড়েন হলস্টোন দম্পতি। তারা চাইছিলেন, তাদের সন্তান অনেক অনেকদিন বেঁচে থাকুক। কিন্তু কোনো কূলকিনারা করতে পারছিলেন না ডাক্তার।
শেষে কঠিন হলেও অনাগত সন্তানের ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত পৌঁছালেন মা-বাবা। তারা সিদ্ধান্ত নেন, সন্তান টেডি জীবিত অবস্থায় জন্মালে মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তার কিডনি আর হৃদযন্ত্রের ভালভ দান করে দেওয়ার পদক্ষেপ নেবেন।
এক বছর আগে হলস্টোন দম্পতির কোলজুড়ে আসে টেডি আর নোয়াহ। কিন্তু জন্মের একশ’ মিনিটের মাথায়ই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে টেডি।
তবে ওই একশ’ মিনিট বেঁচে থেকেই মা-বাবাকে গর্বিত করে গেছে টেডি। সেইসঙ্গে যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে কমবয়সী অঙ্গদাতা হিসেবে ইতিহাসে লেখা হয়ে গেছে তার নাম!
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৫
আরএইচ/এইচএ