ঢাকা: প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠা হিমালয়কন্যা নেপালে চলছে মৃত্যুর মিছিল। এর সঙ্গে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এ দুর্যোগে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে দেশটির অসংখ্য স্থাপনা।
শনিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টা ১১ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) প্রথমবারের মতো কেঁপে ওঠে নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ। এরপর গত দু’দিনে অন্তত চল্লিশবার ভূকম্পনের শিকার হয় রাজধানী কাঠমাণ্ডুসহ পুরো নেপাল।
এ ঘটনায় নিহত হয়েছে তিন হাজারের বেশি মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা করছেন উদ্ধারকর্মীরা। সেই সঙ্গে আহত হয়েছে সাড়ে ছয় হাজারেরও বেশি মানুষ।
ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় অসংখ্য মানুষ রাত পার করছে খোলা আকাশের নিচে। যাদের বাসস্থান টিকে গেছে, তারাও যোগ দিয়েছেন রাস্তায় কাটানো দলের সঙ্গে। আতঙ্কে ঘরে ফিরতে পারছেন না কেউই।
জানা গেছে, গত আট দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এই ভূমিকম্পে ইউনেস্কো ঘোষিত নেপালের সাত বিশ্ব ঐতিহ্যের মধ্যে অন্তত চারটি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এগুলো সবই কাঠমাণ্ডু উপত্যকায় অবস্থিত।
আকাশচুম্বি ধারাহারা টাওয়ার এখন ধুলোয় লুটাচ্ছে। নয় তলা বিশিষ্ট দুইশ’ তিন ফুট উঁচু এই টাওয়ারটি ১৮৩২ সালে তৎকালীন নেপালী প্রধানমন্ত্রী ভিমশেন থাপা নির্মাণ করেন। সে সময় প্রধানমন্ত্রীকে নেপালে ‘মুখতিয়ার’ বলে সম্বোধন করা হতো। ভিম সেনের নামানুসারে এই টাওয়ারকে ভিমসেন টাওয়ারও ডাকা হয় স্থানীয়ভাবে। ইউনেস্কো স্বীকৃতি বিশ্ব ঐতিহ্য ও পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এই টাওয়ার ২৫ এপ্রিলের ভূমিকম্পে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। বেঁচে আছে শুধু এর ভিত্তি।
এদিকে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান পশুপতিনাথ মন্দিরও বিধ্বস্ত হয়েছে এ ভূমিকম্পে। মন্দিরটি কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। তবে ১৭ শতকে রাজা কিরাত যালম্বর এর সংস্কার করেন বলে জানা গেছে। পবিত্র এই তীর্থস্থানকে ১৯৭৯ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা দেয় ইউনেস্কো।
এছাড়া ১৬ শতকে নির্মিত বৎসলা দূর্গা মন্দিরের ছাদ ধস ও দুর্বার মন্দিরসহ বহু প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে এই প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৫
আরএইচ