ঢাকা: স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে নেপালে মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ভূমিকম্পের সপ্তাহখানেক পরও এখন অসংখ্য মানুষের মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে।
দেশটির ন্যাশনাল ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টারের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, শনিবার (২ মে) রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা সাত হাজার ৪০- এ দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৩৯৮ জনে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম জানায়, গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে ভূমিকম্পের আঘাতের পর এখন পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তাদের উদ্ধার ও তাৎক্ষণিক সেবা তৎপরতায় সহায়তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ভূমিকম্পের কয়েকদিন পর ধ্বংসাবশেষ থেকে অবিশ্বাস্যভাবে কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এখন আর কারও বেঁচে থাকার আশা করা যাচ্ছে না।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লক্ষ্মী ধাকল বলেন, এখন আর কাউকে জীবিত খুঁজে পাওয়া অলৌকিক হবে। তবে, আমরা পুরোপুরি হাল ছেড়ে দিইনি এবং এখনও উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, হিমালয়কন্যার প্রায় ৩০ লাখ মানুষের জন্য এখন খাদ্য সহায়তা দরকার। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকেরও বেশি মানুষকে জরুরি খাবার সরবরাহ করা প্রয়োজন।
স্থানীয় উদ্ধারকারী বাহিনীর সঙ্গে কর্মরত ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা রমন লাল শুক্রবার (১ মে) জানান, মর্গে আর মৃতদেহ রাখার জায়গা হচ্ছে না। তাই উদ্ধারের পর পর মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলে ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছি।
নেপালি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ধীরে ধীরে সাহায্য পৌঁছতে শুরু করেছে। ২০টি হেলিকপ্টার করে গোরখা, দোলাখা, রাসুয়া, ধাদিং অঞ্চলে ত্রাণ সামগ্রী যাচ্ছে। তবে আরও হেলিকপ্টার দরকার। সহায়তার জন্য চীন কিছু হেলিকপ্টার পাঠাচ্ছে।
অন্যান্য দেশকে সহায়তার জন্য ব্যবহারে কিছু হেলিকপ্টারের পাঠানোর অনুরোধ করেছে নেপাল সরকার।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মৃতদেহের গন্ধে অনেক বাসিন্দা তাদের বাড়িঘরে ফিরতে পারছেন না।
ভূমিকম্পের পর থেকেই অনেক নেপালি খোলা আকাশের নিচে ঘুমাচ্ছেন। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ছয় লাখ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নেপালের তথ্যমন্ত্রী মিনেন্দ্রা রিজাল বলেন, সরকার নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে এক হাজার মার্কিন ডলার এবং সৎকারের জন্য ৪০০ ডলার দিচ্ছে।
গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এমনটি হলে নেপালে ১৯৩৪ সালের ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে এবারের ভয়াবহ আঘাত। ওই ভূমিকম্পে আট হাজার ৫০০ মানুষ নিহত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৪ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৫
এইচএ/