ঢাকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জয়ের ৭০ বছরপূর্তিতে রাশিয়ায় বিশাল সেনা কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার (০৯ মে) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (আন্তর্জাতিক সময় সকাল ৭টায়) দেশটির রাজধানী মস্কোর রেড স্কয়ারে এ কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়।
এতে হাজার হাজার সেনা অংশ নেওয়া ছাড়াও অত্যাধুনিক বিভিন্ন অস্ত্রেরও প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
বিশটিরও বেশি দেশের প্রধান এ কুচকাওয়াজ পরিদর্শনে বর্তমানে মস্কোয় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি ও জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন।
তবে ইউক্রেন সংকটে রাশিয়ার ভূমিকার জন্য পশ্চিমা নেতৃবৃন্দসহ বেশ কয়েকটি দেশের প্রধান এ অনুষ্ঠান বয়কট করছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া ও হতাহত সোভিয়েত সেনাদের প্রতি সম্মান জানান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সৈনিকদের প্রতিও সম্মান জানান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের জনগণকে ধন্যবাদ জানাই।
পুতিন বলেন, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে আন্তর্জাতিক সহযোগীতা হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা দেখছি, কীভাবে সেনা শক্তিতে শক্তিমান সরকারগুলো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে।
এসময় তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন চালানর ব্যাপারে পশ্চিমা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।
কুচকাওয়াজের সময় কয়েকদল সেনাসদস্যকে দ্বিতীয় যুদ্ধের সময়কার উর্দি পরা অবস্থায় দেখা যায়। এছাড়া শতাধিক যুদ্ধবিমানকে রেড স্কয়ারের ওপর দিয়ে উড়ে যেতেও দেখা গেছে।
কুচকাওয়াজ উপলক্ষে উচ্চ প্রযুক্তির রাশিয়ান যুদ্ধট্যাংক টি-১৪ আর্মাতাকে জনসম্মুখে উপস্থাপণ করা হয়। সেই সঙ্গে আরএস-২৪ ইয়ার্স আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রও দেখানো হয় এসময়। একেকটি আরএস-২৪ ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র তিনটি করে পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম। এসব অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম এবারই প্রথম সবার সামনে উপস্থাপন করল রাশিয়া।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৯ সালের ‘আগ্রাসন বিরোধী চুক্তি’ ভঙ্গ করে ১৯৪১ সালের ২২ জুন সোভিয়েত ইউনিয়ন হামলা করে জার্মান নাৎসি বাহিনী। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত জার্মান বাহিনী সামনে বাড়তে থাকে এবং স্তালিনগ্রাদ অবরুদ্ধ করে রাখে। এই অবরোধে আটকা পড়া মানুষদের মধ্যে রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মাও ছিলেন। এসময় অনাহার ও তৃষ্ণায় মারা যান পুতিনের বড় ভাই। তখনও পুতিন জন্মগ্রহণ করেননি। অবরোধে লাখ লাখ মানুষ নিহত হলেও অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে যান তার মা। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে পুতিন পৃথিবীর বুকে আসেন।
১৯৪৪ সাল থেকে সোভিয়েত বাহিনী সামনে বাড়তে শুরু করে ও জার্মান বাহিনী পেছনে সরে যেতে বাধ্য হয়। ১৯৪৫ সালের ২১ এপ্রিল বার্লিনে প্রবেশ করে সোভিয়েত সেনারা। ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল হিটলারের আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে যুদ্ধের।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিশ্বব্যাপী ৬ কোটিরও বেশি মানুষ নিহত হয়। এর মধ্যে আড়াই কোটির বেশি মানুষ রাশিয়ার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৫
আরএইচ