জেনেভা: জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক তদন্ত কর্মকর্তারা বিন লাদেন হত্যার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। নিরস্ত্র বিন লাদেনকে হত্যা আদৌ বৈধ ছিল কিনা বিষয়টি পরিস্কার করতে শুক্রবার তারা এ আহ্বান জানায়।
গত রোববার পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে অভিযানে আল কাযেদা প্রধান বিন লাদেনকে জীবিত ধরার কোনো পরিকল্পনা ছিল কিনা এবং তিনি আত্মসমর্পন করতে চেয়েছিলেন কিনা এ বিষয়গুলো বিস্তারিত জানাতে বলেছে সংস্থাটি।
তারা বলছেন, এরকম অভিযানে সন্দেহভাজনকে হত্যার চেয়ে আত্মসমর্পনের সুযোগ, সতর্কতামূলক গুলি ছোঁড়া এবং প্রয়োজন হলে গুলি করে আহত করাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।
সন্ত্রাস দমন অভিযানে মানবাধিকার সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করেন জাতিসংঘের বিশেষ কর্মকর্তা মার্টিন স্কিনিন বলেন, এসব নিয়ম না মানা হলে তাকে ঠা-া মাথায় খুন বলা যাবে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিতে হবে। যেমন, মার্কিন বাহিনী সে সময় অপর পক্ষ থেকে আক্রমণের শিকার হয়েছিল কিনা তা পরিস্কার করতে হবে।
রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জানতে চেয়েছি তাদের পক্ষ থেকে আত্মসমর্পনের এবং গ্রেপ্তারের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কিনা, আর বিন লাদেন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ’
এদিকে পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, মার্কিন বাহিনীর হেলিকপ্টার অ্যাবোটাবাদের ওই কম্পাইন্ডে নামানোর পর নিরস্ত্র বিন লাদেনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এতে তারা কোনো প্রকার বাধার সম্মুখীন হয়নি।
একে তারা ঠা-া মাথার খুন বলেই বর্ণনা করছেন।
স্কিনিন বলেন, এটা এখনো পরিস্কার নয় রোববারের অভিযানে মার্কিন বাহিনী লাদেনকে আত্মসমর্পনের কোনো সুযোগ দিয়েছে কিনা।
তিনি বলেন, একটি অভিযানের পরিকল্পনা এভাবেই করতে হবে; আত্মসমর্পন ও গ্রেপ্তারের একটা যথার্থ সম্ভাবনা রাখতে হয়। এমনকি যদি আপনার মনে হয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হতে পারে এবং আপনাকে ঘাতক বাহিনীর স্মরণাপন্ন হতে হবে তাহলেও।
এসব কিছু বিবেচনা করেই সর্বশেষ উপায় হিসেবে ঘাতক বাহিনীকে নিয়োজিত করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, বিন লাদেন হত্যা অভিযানে প্রথম দিকে ব্যাপক প্রতিরোধের সম্মুখীন হওয়ার কথা বললেও পরে যুক্তরাষ্ট্র ভিন্ন বর্ণনা দেয়। তারা বলে, বিন লাদেনের একমাত্র বার্তাবাহক প্রতিরোধ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হত্যা করা হয়। অথচ আগে বলা বলা হয়েছিল, অভিযানে ৪০ মিনিট ধরে সংঘর্ষ হয়। পরে নিরস্ত্র বিন লাদেনকে গুলি করে হত্যার কথাও স্বীকার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় ১২০০ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১১