সিংগাপুর: আধুনিক নগররাষ্ট্র সিংগাপুরের সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে ভোট কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়।
সাবেক এ ব্রিটিশ উপনিবেশ ১৯৬৫ মালয়েশিয়ার কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এ নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বিশ্লেষকদের ধারণা, পিপলস অ্যাকশন পার্টিই (পিএপি) ধনী এ নগররাষ্ট্রটির শাসনভার পুনরায় নিতে যাচ্ছে।
সিংগাপুরে ভোট প্রদান বাধ্যতামূলক। সকাল থেকেই ভোট কেন্দ্রগুলোতে দলে দলে ভোটাররা আসতে শুরু করেছেন। রাত ৮টায় ভোট গ্রহণ শেষে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন বিভাগ জানিয়েছে। এদেশের ভোটার সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ।
এবারের নির্বাচনে বিরোধীদল সংসদে ৮৭টি আসনের মধ্যে ৮২টিতে প্রার্থী দিয়েছে। সর্বশেষ ২০০৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে মাত্র অর্ধেক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগের সংসদে ৮৪ আসনের মধ্যে ৮২ আসন পেয়ে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করলেও এবার তারা কম আসন পেতে পারে। ব্যাপক আয় বৈষম্য এবং অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দেশে অর্থনীতির ওপর যে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে তাতে বিরোধীদল লাভবান হবে।
এছাড়া, সিংগাপুরের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এবার বিরোধীদলগুলোর টিকিটে পিএপির বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।
তবে আশার কথা হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ে পিএপির এখনো প্রচুর জনসমর্থন রয়েছে। ২০০৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে তারা ৬৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক এক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থার জরিপে দেখা গেছে এবার তাদের জনসমর্থন কমে ৬১ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট এস আর নাথান গত ১৯ এপ্রিল পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। নিয়ম অনুযায়ী পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ২৩ লাখ ১১ হাজার ৫শ’ ৮২ জন ভোটার। ২৭টি নির্বাচনী এলাকার ৮৭টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১২টি একক প্রতিনিধিত্বশীল (এসএমসি) এবং ১৫টি দলগত প্রতিনিধিত্বশীল (জিআরসি) নির্বাচনী এলাকা।
সিঙ্গাপুরের পার্লামেন্ট পাঁচ বছর মেয়াদি। মেয়াদ শেষে প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অধীন নির্বাচন বিভাগ নির্বাচনের আয়োজন করে।
এই নির্বাচন সিঙ্গাপুরের পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃত্ব কী হবে তা ঠিক করে দেবে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পুরনো নেতৃত্বের স্থলে দেশ যদি নতুন নেতৃত্ব পায়, তবে তাতে ‘ভবিষ্যতমুখী এক নবতরঙ্গের সূচনা’ ( অ্যাডভেন্ট অব ফিউচার ফেসিং নিউ ওয়েভ) হবে । ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টিও (পিএপি) এমন বার্তাই ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
অন্যদিকে বিরোধী দল ওয়ার্কার্স পার্টি (ডব্লিউপি) নির্বাচনকে সিঙ্গাপুর এবং নিজেদের জন্য কঠিন এক অগ্নিপরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করছে। কারণ তাদের দুই শক্তিশালী প্রার্থী নিজেদের শক্ত ঘাঁটি ছেড়ে জিআরসি এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১১