কায়রো: মিশরের রাজধানী কায়রোতে মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে শনিবার রাতভর সহিংস দাঙ্গার পর রোববার মন্ত্রীসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন সেদেশের প্রধানমন্ত্রী এসান শারাফ। সেই সঙ্গে উপসাগরীয় দেশে অনুষ্ঠেয় সফরও বাতিল করা হয়েছে।
দাঙ্গায় উভয়পক্ষে নিহত হয়েছেন ১০ জন। এছাড়া ১৮৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলী জেলা ইমবাবায় মুসলমানদের একটি গ্রুপ শনিবার বিকেলে কপটিক (মিশরীয় খ্রিস্টান) সেন্ট মেনা গির্জায় হামলা চালায়। ওই গির্জায় একজন খ্রিস্টান নারীকে জোর পূর্বক আটক রাখা হয়েছে যে মুসলমান হতে হতে চায় এ দাবিতে তারা তাকে মুক্ত করতে গেলে খ্রিস্টানদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে।
ওই গির্জার যাজক ফাদার হারমিনা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, বিকেলে গুন্ডা বাহিনী এবং স্থানীয় সালাফিরা (মুসলিমদের একটি সম্প্রদায়) গির্জায় আগুন দিলে এ কপটরা পুড়ে মারা যায়।
গিজার গভর্নর আলি আবদেল রাহমান রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে জানান, আহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে।
গির্জার চারদিকে সামরিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে তারা ফাঁকাগুলি করেন। এ সময় উভয় পক্ষ পরস্পরের প্রতি পাথর নিক্ষেপ করছিল। এরমধ্যে মুসলিমদের পক্ষ থেকে আগুনের বোমা নিক্ষেপ করা হলে গির্জার পাশের একটি বাড়িতে আগুন ধরে যায়।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ইমবাবায় অপর একটি গির্জায়ও আগুন দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে, মুসলিমদের অভিযোগ খ্রিস্টানরাই আগে তাদের ওপর আগুনের বোমা ফেলে। ইসলাম গ্রহণে ইচ্ছুক এক নারীকে জোরপূর্বক গির্জায় আটকে রাখা হয়েছিল যাকে তারা মুক্ত করার চেষ্টা করছিল বলে তারা দাবি করে।
মাহমুদ নামে এক মুসলিম জানান, ‘তারা আমাদের ওপর আগুনের বোমা নিক্ষেপের সময়ও আমরা শান্তিপূর্ণ ছিলাম। ’
মিশরে ৮ কোটি মানুষের মধ্যে ১০ শতাংশ খ্রিস্টান। এ মিশরীয় খ্রিস্টানারা প্রায়ই বৈষম্যের অভিযোগ করেন। দেশটিতে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রায়ই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখা দেয়।
মিশরে বর্তমান রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে এরকম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠনে নতুন সমস্যার জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১১