ঢাকা: জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায় প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে বিশ্ব। গবেষকরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে বৈদ্যুতিক গাড়ির জয় দেখতে আর বেশি দিন নেই।
তবে তেল বা গ্যাসচালিত যানবাহনের মতো অত্যাধুনিক এ গাড়িরও রয়েছে সীমাবদ্ধতা। বাড়িতে বা সড়কের ধারে পার্ক করে রাখা অবস্থায় চার্জ করতে হয় এটি।
কিন্তু এমন যদি হয়, মহাসড়ক ধরে ছুটে চলেছে একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি। হঠাৎ বিরান একটা এলাকায় শেষ হয়ে গেলো এর চার্জ। কি করবেন চালক? তেল বা গ্যাসচালিত গাড়ির মতো এ গাড়িকেও ঠেলে ঠেলে সামনের চার্জিং স্টেশন পর্যন্ত নেওয়া ছাড়া আর কোনো গতি থাকবে না।
অনেকে হয়তো তারবিহীন (ওয়্যারলেস) ‘পড’র কথা বলবেন। তারবিহীন এ যন্ত্র দিয়ে বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করা যায়। তবে তার জন্যও কোনো একটা স্থানে দাঁড়াতে হয়।
এমন সমস্যা থেকে উত্তরণে ব্রিটিশ সরকার নতুন প্রযুক্তির এক সড়ক ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছে। খুব শিগগিই এর পরীক্ষাও চালানো হবে। এ প্রযুক্তির সড়কে চলতি অবস্থাতেই চার্জ করা যাবে বৈদ্যুতিক গাড়ি।
গবেষকরা বলছেন, পরিকল্পিত নতুন প্রযুক্তির এই সড়ক ব্যবস্থায় তারবিহীন চার্জারের মাধ্যমে যেভাবে ফোন চার্জ করা হয়, সেভাবে চলতি অবস্থাতেই গাড়ি চার্জ করা যাবে। এক্ষেত্রে চৌম্বকীয় আবেশ প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদই এই সড়ক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে যুক্তরাজ্যে। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার অংশ হিসেবে প্রকৌশলীরা বৈদ্যুতিক যানবাহনে তারবিহীন প্রযুক্তি সংযোজন করবেন। আর সড়কের নিচে বসিয়ে দেবেন বিশেষ কিছু যন্ত্র।
এ প্রযুক্তিতে সড়কের নিচে থাকা তার তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রের (ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড) সৃষ্টি করবে। এই সড়কের ওপর দিয়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক গাড়ি তারবিহীন চার্জার দিয়ে তরঙ্গ গ্রহণ করবে। চার্জারে থাকা একটি গ্রাহক (রিসিভার) যন্ত্রই এ কাজ করবে। এই তরঙ্গ পরে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হবে।
এ ব্যবস্থায় সড়কে একটি যোগাযোগ প্রযুক্তিও স্থাপন করা হবে। এতে কোনো গাড়ি আসার সময়ই আগাম সংকেত পেয়ে যাবে সড়কটি। ফলে তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্র সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে আগে থেকেই।
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে উন্নত প্রযুক্তির এ সড়ক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের কাজ সম্পন্ন করা হবে যুক্তরাজ্যে। এ প্রকল্পে ব্রিটিশ সরকার ৫০০ মিলিয়ন ইউরো (৪ হাজার ৫৩৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা) বাজেট ধার্য করেছে।
যুক্তরাজ্যের প্রধান মহাসড়ক প্রকৌশলী মাইক উইলসন বলেছেন, প্রতি মুহূর্তে যানবাহনখাতে প্রযুক্তির উন্নতি সাধিত হচ্ছে। ইংল্যান্ডের সড়কে অতি-নিম্ন বিকিরনের গাড়ির প্রসারে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এদিকে, বর্তমান ব্যবস্থায় চার্জিং স্টেশনের সংখ্যাও বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে দেশটির সরকার। প্রতি ২০ মাইল পর পর একটি করে এমন স্টেশন বসানো হবে বলে জানান মাইক।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৫
আরএইচ