ঢাকা: ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময় বিশ্বপরাশক্তিদের মধ্যে ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়ন।
বিশেষ করে ভারতের পরমাণু কর্মসূচি এবং ৭১‘র যুদ্ধের সময় ভারতকে সর্বোতভাবে সহায়তা করে সোভিয়েত ইউনিয়ন।
ভারত রাশিয়া তথা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘অল ওয়েদার ফ্রেন্ড’ বিশ্বে প্রচলিত ধারণা এটাই।
তবে এই ধারণায় এবার একটু গরল মেশাচ্ছে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ’র সদ্য প্রকাশিত কিছু গোপন নথি।
ওই নথিতে দাবি করা হয়, প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর সময় সোভিয়েত দাদাগিরিতে বিরক্ত ছিলো ভারত। এমনকি পাকিস্তানে জেনারেল জিয়াউল হকের সরকারের পতন হলে সেক্ষেত্রে যদি সোভিযেতপন্থী কোনো সরকার পাকিস্তানে আসে তবে সোভিয়েত বিরোধী পক্ষকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার কথাও ভেবে রেখেছিলেন তিনি।
আশির দশকের মধ্যভাগে আফগানিস্তানে মার্কিন সহায়তায় পাকিস্তানের ভূমিকায় বিরক্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন কেজিবির মাধ্যমে জেনারেল জিয়াউল হকের সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা চালিয়েছিলো। এজন্য তারা মদদ দিচ্ছিলো জিয়া বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষকে। সোভিয়েত ইউনিয়নের উদ্দেশ্য ছিলো আফগানিস্তানের মত পাকিস্তানকেও নিজেদের বলয়ের আওতায় আনা ।
মূলত এই বিষয়টিরই বিরোধী ছিলেন রাজীব গান্ধী। তিনি চেয়েছিলেন ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ‘বাফার স্টেট’ হিসেবে পাকিস্তান থাকুক। যেমন চীন ও ভারতের মধ্যে রয়েছে নেপাল ও ভুটান।
সম্প্রতি ১৯৮৫ সালের ২১ অক্টোবর তারিখ দেয়া ৩১ পাতার একটি নথি প্রকাশ করেছে সিআইএ। নথিটির শিরোনাম ‘ আফগানিস্তানে সোভিয়েত উপস্থিতি: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং স্থানীয় শক্তিগুলোর ক্ষেত্রে এর তাৎপর্য)
এতে বলা হয়, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সোভিয়েত সুদূরপ্রসারী অভিসন্ধি দেখে ভারত চিন্তিত হয়ে পড়তে পারে।
আরও বলা হয়, সোভিয়েত রাশিয়ার বিরুদ্ধে শক্তির সাম্য বজায় রাখতে পাকিস্তানকে কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষাকারী বা বাফার হিসেবে দেখে দিল্লি।
এক্ষেত্রে মস্কো যদি ইসলামাবাদে কর্তৃত্ব করে তবে এর বিরোধিতা করবে ভারত।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সালে সোভিয়েত রাষ্ট্রপ্রধান মিখাইল গর্বাচেভ এশিয়া জুড়ে একটি যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’র পরিকল্পনা শোনালেও তাতে সায় দেননি রাজীব। এর অল্পদিনের মধ্যেই নিহত হন রাজীব গান্ধী। সোভিয়েত ইউনিয়নেরও পতন ঘটে তিন বছরের মাথায়।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৫
আরআই