কথায় বলে, ‘সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়’। এ-যে কতো খাঁটি কথা তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
রোজওয়েল পার্ক ক্যানসার ইনস্টিটিউটের পরিচালক এই চিকিৎসক স্পেন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছিলেন। তারই সহযাত্রী দু’বছরের একটি বাচ্চা তিন চার ঘণ্টা ধরে ক্রমাগত কেঁদেই যাচ্ছিল। বাচ্চাটা অ্যাজমার আক্রমণে এতোটাই কাহিল ছিলো যে শ্বাস নিতে পারছিল না। এক পর্যায়ে ওর শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা আশংকাজনক পর্যায়ে নেমে যায়। এ অবস্থায় ওকে বাঁচানোর একটাই পথ ছিল আর তা হচ্ছে জরুরি ভিত্তিতে ইনহেলার দেওয়া। কিন্তু ফ্লাইটে যে ইনহেলারটি ছিল সেটি ওকে দেওয়া যাচ্ছিল না। কারণ ওটা ছিল বড়দের ব্যবহারোপযোগী। ডাক্তার খুরশিদ গুরুর কাছে ছিল একটি প্লাস্টিকের বোতল ও একটি কাপ। তিনি উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে এ-দুটো দিয়েই কাজ চালানোর মতো একটা ইনহেলার বানিয়ে ফেললেন। ওটা দিয়েই তিনি বাচ্চাটাকে অক্সিজেন ও অ্যাজমার ওষুধ প্রয়োগ করলেন। ‘আধঘণ্টার মধ্যেই বাচ্চাটার কষ্ট ও মৃত্যু ঝুঁকি দুটোই দূর হলো। ’
এবিসি নিউজকে তিনি জানালেন, অ্যাজমার পাশাপাশি প্রচণ্ড ঠাণ্ডা লেগে বাচ্চাটার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তিনি একটা পানির কাপ নিলেন তারপর ওটার মাঝখানে ফুটো করে ওটাকে বসিয়ে দিলেন বোতলের মুখে। ওতে ওষুধ ও অক্সিজেন ভরে ওটা বাচ্চাটার মুখে ধরলেন। ওতেই কাজ হলো। এরপর বাচ্চার বাবা-মাকে বললেন ওটা বাচ্চাটার মুখে চেপে ধরে রাখতে। এভাবে ওষুধ ও অক্সিজেন পেয়ে বাচ্চাটার তীব্র শ্বাসকষ্ট দূর হলো। এভাবে তার উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে বেঁচে গেল বাচ্চাটার প্রাণ।
এয়ার কানাডা এয়ার লাইন্স কর্তৃপক্ষ উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সাহসী ভূমিকার জন্য তাকে.আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছে। আর বাচ্চাটির বাবা-মা ও ফ্লাইটের অন্য যাত্রীদের চোখে তিনি এখন নায়ক ও ত্রাতা।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫
জেএম