ঢাকা: গত এক দশক ধরে খনন শেষে বাইবেলে উল্লিখিত ঈশ্বরের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন শহর সদোম আবিষ্কার করার দাবি করেছেন গবেষকরা। জর্ডানের তাল এল-হাম্মাম অঞ্চলে আবিষ্কৃত এ এলাকা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দানবীয় ব্রোঞ্জ যুগের এ শহরটির সঙ্গে বাইবেলের বর্ণনানুযায়ী ঈশ্বরের ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরের অনেক মিল রয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, সদোম শুধু এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহরই নয়, বাইবেলের বর্ণনার মতোই এটি জর্ডান নদীর পূর্বে অবস্থিত। ধারণা অনুযায়ী, পাপাচারের কারণে খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ থেকে ১৫৪০ সালের মধ্যে শহরটি ধ্বংস করে দেন ঈশ্বর।
আদিপুস্তক ও নথিপত্র ঘেঁটে জানা যায়, সদোম পূর্ব জর্ডানের সবচেয়ে বড় শহরগুলোর মধ্যে একটি ছিল।
নতুন এ অনুসন্ধানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিউ মেক্সিকোর ট্রিনিটি সাউথওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির স্টিভেন কলিনস। তিনি জানান, ব্রোঞ্জ যুগে এ শহরটি অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেক বড় ছিল।
২০০৫ সালে খনন কাজ শুরু হওয়ার আগে দক্ষিণ জর্ডান নদী উপত্যকার ব্রোঞ্জ যুগ সম্পর্কে খুব কম লোকই জানতো। তবে বিশাল এ নগরী সত্যিই বাস্তববুদ্ধি দিয়েই নির্মাণ করা হয়েছিলো বলে জানান কলিনস।
কলিনসের গবেষণা দলটি জানায়, শহরটির দেওয়াল ও সুরক্ষাপ্রাচীর ছিলো প্রায় সাড়ে ১৭ ফুট পুরু ও প্রায় ৩৩ ফুট উঁচু। শহরের প্রবেশ দ্বার ও প্রহরীদুর্গও এ প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত ছিলো।
পরবর্তীতে ব্রোঞ্জ যুগের মাঝামাঝিতে দেওয়ালের পুরুত্ব বেড়ে হয় ২৩ ফুট। বিশ্লেষকদের বিশ্বাস, নিঃসন্দেহে এটি সেই ঐতিহাসিক সদোম শহর। এর সাপেক্ষে পমাণ হলো, বাইবেলের বর্ণনার মতোই শহরটি জর্ডান নদী তীরে অবস্থিত, যা কিনা গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ ছিলো।
এছাড়া, অন্যান্য প্রমাণগুলো বলে, তাল এল-হাম্মাম মধ্য বোঞ্জ যুগের শেষের দিকে হঠাৎই মরুভূমিতে পরিণত হয়। এরপর সাতশো বছর তা জনবসতিহীন পতিত জমিরূপে পড়ে থাকে।
রহস্য এখানেই শেষ নয়, সাত শতাব্দী পর শহরটি আবার জেগে ওঠে। ততদিনে লৌহ যুগ শুরু হয়েছে। উন্মোচিত বিশাল লোহার প্রবেশদ্বারই তার প্রমাণ।
ধারণা করা হচ্ছে, খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ থেকে ৩৩২ সালে কাল্টিক সভ্যতাকে কেন্দ্র করে নতুনভাবে শহরটি নির্মিত হয়েছিলো। এ নতুনত্বের অংশ ছিলো বিলাসবহুল প্রবেশদ্বার, শহরপ্রাচীর ও ঘরবাড়ি।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৫
এসএমএন/এইচএ