ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বাশারের মস্কো সফরে যুক্তরাষ্ট্রের কপালে ভাঁজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৫
বাশারের মস্কো সফরে যুক্তরাষ্ট্রের কপালে ভাঁজ ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের হঠাৎ মস্কো সফরে কপালে ভাঁজ পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। একদিনের এ ঝটিকা সফরের ব্যাপারে এরই মধ্যে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।

আসাদকে স্বাগত জানানোয় রাশিয়াকেও খোঁচা দিতে ভোলেনি মার্কিন কর্তৃপক্ষ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আসাদের এ সফরকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার পূর্বাভাস বলে মনে করছে মার্কিনিরা। আর তিনি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠলে তার দেশে জিইয়ে রাখা সংঘাতের ফল পশ্চিমাদের জন্য ঘরে তোলা মুশকিল হয়ে পড়বে বলেই মত তাদের।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) মস্কো সফর করেন বাশার আল-আসাদ। প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পরদিন, বুধবার (২১ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালেই তিনি দামেস্কে ফিরে যান। সাক্ষাতে তার দেশে সন্ত্রাসের সংক্রমণ বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ায় পুতিনকে ধন্যবাদ জানান বাশার। ২০১১ সালে সিরিয়ায় সংঘাত শুরুর পর এই প্রথম তিনি বিদেশ সফর করলেন।

তবে তার এ সফরকে সহজভাবে নেয়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দামেস্কে ফিরে যাওয়ার পরই তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয় হোয়াইট হাউজ।

হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র এরিক শুলজ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আসাদের জন্য লালগালিচা সংবর্ধনা দেখলাম, যে কি না নিজের জনগণের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। রাশিয়া সিরিয়াতে যে লক্ষ্য অর্জনের কথাগুলো বলেছিল, সেগুলোর সঙ্গে কিছুতেই এ ঘটনাকে মেলানো যায় না।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বাশারের এ সফর তাদের অবাক করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের মূল চিন্তার বিষয়, শেষে না মস্কোর পদক্ষেপের কারণে সিরিয়া যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হয়।

এদিকে, বাশারের হঠাৎ মস্কো সফরের পরপরই মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এদের মধ্যে সৌদি আরব ও তুরস্কের নেতারা উল্লেখযোগ্য। সিরিয়াবিদ্বেষী সৌদি ও তুরস্ক বরাবরই বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে আসছে। মিশর ও জর্দানের নেতাদের সঙ্গেও পুতিন যোগাযোগ করেছেন বলে রাশিয়ার সংবাদসংস্থাগুলোর খবরে জানানো হয়েছে। পুতিনের এ যোগাযোগ পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।

এরই মধ্যে শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) ভিয়েনায় সিরিয়া সংকট ইস্যুতে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই ল্যাভরভ ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন আহমেদ আল-জুবেইর ও তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফেরিদুন হাদি সিনিরলিও’লুর।

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো তুরস্কও বাশারের মস্কো সফরকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাভুতগলু বলেছেন, সিরিয়ার সরকারের আর কোনো বৈধতা নেই।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ইস্যুটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলোর মাথাব্যাথার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কারণ, সংঘাত শুরুর পর এই প্রথম বাশার দামেস্ক ত্যাগ করা নিরাপদ মনে করেছেন, যা দেশটিতে পশ্চিমা উদ্দেশ্য ব্যহত হওয়ার পূর্বাভাস বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, সিরিয়ার সরকারের প্রতি রাশিয়ার যে আস্থা রয়েছে, সেটাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এতে। ফলে বাশারের গোড়া আগের চেয়ে আরও শক্ত হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

কয়েকজন বিশেষজ্ঞ অবশ্য দাবি করেছেন, এতো মাথাব্যাথার কিছু নেই। এ সফর সিরিয়া সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের পথ অনুসন্ধানকেই তরান্বিত করেছে। কারণ বাশারের মস্কো ত্যাগের পরপরই পুতিন মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৫
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।