সারত: লিবিয়ার নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি বিদ্রোহীদের সঙ্গে যেকোনো আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। লিবিয়ার ক্ষমতা হস্তান্তরের যে প্রচেষ্ঠা পশ্চিমাদের সহযোগিতায় চলছিল গাদ্দাফির এই মনোভাবে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।
গত মার্চ থেকে লিবিয়াতে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ চলছে। বিদ্রোহীদের সব ধরনের সহেযাগিতা দিতে মার্চে পশ্চিমারা সামরিক অভিযান পরিচালনা সত্ত্বেও দেশটিতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
গাদ্দাফির নিজের শহর সারতে হাজার হাজার সমর্থকদের সামনে রেকর্ড করা অডিও ভাষণে বৃহস্পতিবার গাদ্দাফি বলেন, ‘তাদের (বিদ্রোহী) ও আমার মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত কোনো আলোচনা হবে না। ’
তিনি বলেন, ‘তাদের উচিত লিবিয়ার জনগণের সঙ্গে কথা বলা। জনগণই তাদের কথার জবাব দেবে। ’
এদিন সমুদ্রতীরবর্তী ওই শহরটিতে লোকেরা সবুজ টুপি পরে, মেয়েরা পতাকা উড়িয়ে এবং শিশুরা গালে গাদ্দাফির সমর্থনে বিভিন্ন সেøাগান লিখে জড়ো হয়েছিল।
গাদ্দাফির প্রতি জনগণের এ সমর্থন এবং উৎসাহ দেখে মনে হচ্ছিল পাঁচ মাস ধরে চলা সহিংসতা নিরসণের জন্য সমঝোতা সুদূর পরাহত।
সশস্ত্র বিদ্রোহীরা মিসরাতা এবং তেল সমৃদ্ধ ব্রেগা শহর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তবে রাজধানীসহ আরও অন্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে প্রবেশ করতে পারেনি। তবে সামনে রমজান মাসে সংঘর্ষ বন্ধ থাকতে পারে।
গত বুধবার ফ্রান্স বলেছে, ক্ষমতা হস্তান্তরের পরও গাদ্দাফিকে দেশে থাকতে দেওয়ার শর্তে সমঝোতা হতে পারে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, গাদ্দাফিকে অবশ্যই ক্ষমতা ছাড়তে হবে তবে তিনি লিবিয়াতে থাকতে পারবেন কি না তা ঠিক করবে লিবিয়ার জনগণ। আফ্রিকান ইউনিয়ন চাচ্ছে সংঘর্ষ বন্ধে একটা সমেঝাতা হোক।
বৃহস্পতিবার অডিও বার্তায় গাদ্দাফির কণ্ঠস্বরে বেশ আত্মবিশ্বাস লক্ষ্য করা যায়। বিদ্রোহী এবং তাদের পশ্চিমা সমর্থকদের বিরুদ্ধে লড়াই করে তিনি টিকে থাকবেন এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত বলেই মনে হচ্ছিল।
সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ যুদ্ধের ফলাফল জনগণের পক্ষেই যাবে। ন্যাটো আপনাদের পরাজিত করতে পারবে না। তারা পরাজিত হবে এবং এখান থেকে পালাবে। ’
সমর্থকদের র্যালি দেখাতে গাদ্দাফি সরকার বিদেশি সাংবাদিকদের বাসে করে সারত শহরে নিয়ে গিয়েছিল। র্যালিতে সমর্থকরা গাদ্দাফির বিশাল বিশাল ছবি বহন করছিল এবং নেতার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিল। পরে সন্ধ্যার দিকে তরুণ সমর্থকরা আকাশে গুলি ছুড়ে উল্লাস করে।
এটা স্পষ্ট যে সহস্রাধিক লোকের এ র্যালি প্রমাণ করে লিবিয়ার জনগণ পরিষ্কারভাবে বিভক্ত। এখানে চলমান রাজনৈতিক সংঘাতের খুব দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটবে তার কোনো সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১১