ঢাকা, সোমবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

প্রাণ দিয়ে মেয়েকে বাঁচিয়ে গেলেন বাবা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৬
প্রাণ দিয়ে মেয়েকে বাঁচিয়ে গেলেন বাবা মেয়ে ফারমিনার সঙ্গে হাসপাতালের বেড়ে শূন্যে তাকিয়ে মা বেগো

ঢাকা: বউয়ের জন্য কাঁচের চুড়ি আর আদরের পুঁচকে মেয়েটির জন্য জুতো কিনতে বাজারে এসেছেন দাওরাও বসুমাতারি। কোলে কলিজার টুকরো মেয়েটাই।

বউ বেগো বসুমাতারিকে আসতে বলেছিলেন, কিন্তু রান্নাবান্না আর বাড়িতে কিছু কাজ পড়ায় আসেননি তিনি।

পেশায় অটো চালক দাওরাও মেয়েকে নিয়ে বাজারে ঢুকছিলেন তখন। হঠাৎ বিকট শব্দে গ্রেনেড বিস্ফোরণ। কেঁপে ওঠে পুরো বাজার। জ্বলতে থাকে আশপাশের দোকানগুলো।

মুহুমুর্হু গুলির শব্দে মেয়েকে বুকে আগলে ছুটতে শুরু করেন দাওরাও। কিন্তু ততক্ষণে আড়াই বছরের মেয়ে ফারমিনার পায়ে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার লেগে রক্ত ঝরতে শুরু করেছে।  

দাওরাও উদভ্রান্তের মতো ছুটতে শুরু করেন। হঠাৎ একটা গুলি এসে তার মাথায় লাগে। একটা গুলি লাগে পিঠেও। গুলিবিদ্ধ অবস্থায়ই মেয়েকে বুকে আগলে কিছুটা ছোটেন দাওরাও।  

বেশি দূর দৌড়াতে পারলেন না। শেষে একটা দোকানের ছাউনির আড়ালে গিয়ে লুটিয়ে পড়েন দাওরাও (৩৮)। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ছোট্ট মেয়েটাকে বুক দিয়ে আড়াল করে রাখেন বাবা।  

পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর পুলিশ গিয়ে রক্তাক্ত ফারমিনাকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করে।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) আসামের কোকরাঝাড় জেলার একটি বাজারে জঙ্গি হামলার সময় রচিত হয় মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে বাবার আত্মদানের এ মর্মান্তিক গল্প।

হাসপাতালে আহতদের দেখাশোনার দায়িত্বরত কোকরাঝাড় থানার এক পুলিশ অফিসারের কথায়, “দাওরাওয়ের মুখে কিন্তু যন্ত্রণার চিহ্ন ছিল না। হয়তো মেয়েকে বাঁচাতে পেরে প্রশান্তি নিয়ে মরেছেন তিনি। ” এ কথা বলতেই অন্যমনস্ক হয়ে যান পুলিশ অফিসার।

শুক্রবারের ওই হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৬
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।