ঢাকা: সিরিয়ার বোমা হামলার খবর সবে পড়তে শুরু করেছেন সিএনএন উপস্থাপিকা। অটোকিউতে (উপস্থাপক যে ডিভাইসে দেখে দেখে স্ক্রিপ্ট পড়েন) ভাসতে থাকা বাক্য পড়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
সেই চিত্রে দেখা যাচ্ছে, ৫ বছর বয়সী একটি শিশু অ্যাম্বুলেন্সের চেয়ারে নীরব-নিস্তব্ধ হয়ে বসে আছে। মাথা-মুখ-একপাশের চোখসহ বিভিন্ন স্থান ফেটে রক্ত বেরোচ্ছে। তার ওপর ধসে পড়া ভবনের ধুলো সেই রক্তকে শরীরের সঙ্গে লেপ্টে দিয়েছে।
উপস্থাপিকা কেট বোলডুয়ানের গলা ধরে আসছিলো। তিনি থেমে গেলেন। কথা বলতে গিয়েও পারছিলেন না। স্বাভাবিক হতে কয়েক সেকেন্ড সময় নিলেন। এরপর কাঁপা কাঁপা গলায় কাঁদো কাঁদো স্বরে বলতে থাকলেন।
সিরিয়ায় খানিক আগে ওমরান দাকনিশ নামে এই নিষ্পাপ শিশুটিকে রক্তাক্ত করেছে বোমা। সে তার মা-বাবা-ভাই-বোনের সঙ্গে ছিল। কেবল তাকেই বোমার আঘাতে ধসে পড়া ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে...!
কেটের উপস্থাপনের ফাঁকে দেখা যাচ্ছিল, ওমরানকে ধসে পড়া ভবনের ভেতর থেকে উদ্ধার করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা অ্যাম্বুলেন্সের আসনে রেখেছেন। কিছুক্ষণ নীরব থেকে ওমরান তার চোখ মুছতে যায়। দেখে, চোখে পানির বদলে রক্ত আর ধুলোর মিশেলে জমাট হয়ে গেছে। সেই জমাট রক্ত হাতে লেগে গেলে নিষ্পাপ শিশুটি তার চেয়ারে মুছতে বৃথা চেষ্টা চালায়...!
অবস্থা এমন মর্মান্তিক হলেও ওমরানের চোখে-মুখে ব্যথার কোনো চিহ্ন নেই। কেবল সে নীরব-স্তব্ধ ভঙ্গিতে বসে আছে। যেন ভাবছিলো, কেন সে অ্যাম্বুলেন্সে? তার মা-বাবাইবা কোথায়? আর তার শরীর থেকে পানির মতো লাল লাল এসবইবা কী ঝরছে?
খবরের শেষ দিকে ফের উপস্থাপিকা বলে যাচ্ছিলেন সিরিয়ার সংঘাতের কিছু খবর এবং এতে প্রাণহানির চিত্র। ওমরানের ভিডিও আবারও সামনের টিভি পর্দায় ভাসতেই কেট আরও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। একসময় কেঁদেই ফেলেন।
ওমরানকে উদ্ধারের সেই ভিডিওচিত্রের পাশাপাশি সিএনএনের এই খবরের ফুটেজও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের সবাই অবিলম্বে সিরিয়ার এই প্রাণঘাতী যুদ্ধ বন্ধের আকুতি জানিয়ে যাচ্ছেন বিশ্বনেতাদের দরবারে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৬
এইচএ/
** অ্যাম্বুলেন্সের ছেলেটি!