ঢাকা: যেন যুদ্ধের হাওয়া বইছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। এই হাওয়া যে কখন আগুনে রূপ নেবে তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই।
অনেকেই মনে করছেন স্থলপথ, জলপথ কিংবা আকাশপথে হতে পারে আক্রমণ। এই আক্রমণ থেকে দেশ দু’টি কীভাবে নিজেদের ভূখণ্ডকে রক্ষা করবে সে নিয়ে কাগজ-কলমের হিসাব-নিকাশেও বসে গেছেন অনেকে।
সম্প্রতি ফ্রান্স থেকে ভারতের রাফাল মডেলের ৩৬টি যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি সই এবং পাকিস্তানের মহাসড়ক বন্ধ করে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের ‘মহড়া’ হিসাব-নিকাশে তাগাদা বাড়িয়েছে।
এসব খবরের মধ্যে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, যদি পাকিস্তান মহড়া দেওয়া এফ-১৬ যুদ্ধবিমান লড়াইয়ের ময়দানে নামিয়ে দেয় তবে ভারত নামিয়ে দেবে সুখোই-৩০এমকেআইএস যুদ্ধবিমান।
অনেক অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে সেজন্য এ দুই মডেলের যুদ্ধবিমান নিয়েই আগ্রহ দেখা যাচ্ছে পর্যবেক্ষকদের মধ্যে। সেজন্য এ দু’টি যুদ্ধবিমান সম্পর্কে বাংলানিউজ পাঠকদের কিছু তথ্য জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে-
এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন নামে এই যুদ্ধবিমান যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর অন্যতম সেরা ফাইটার এয়ারক্রাফট। এটি চতুর্থ প্রজন্মের মাল্টিরোল ডেটাইম ফাইটার। মার্কিন বিমান বাহিনীর জেনারেল ডাইনামকিস এফ-১৬ এর ডিজাইন করেছিলেন।
১৯৭৬ সালে অনুমোদন পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ হাজার এফ-১৬ যুদ্ধবিমান তৈরি করা হয়েছে। যেকোনো আবহাওয়ায় উড়তে সক্ষম এই যুদ্ধবিমানটি উন্নত করার লক্ষ্যে বেশ কয়েকবার পরিবর্তিত হয়েছে।
একবার জ্বালানি নিয়ে যুদ্ধবিমানটি টানা ৮০০ কিলোমিটার উড়তে পারে। এছাড়া শত্রুর যুদ্ধবিমানের সঙ্গে লড়াইয়ের পর আগের স্থানে ফিরে আসতে এর খ্যাতি রয়েছে।
এফ-১৬ যুদ্ধবিমানটি লম্বায় ৪৯ ফিট পাঁচ ইঞ্চি, উচ্চতায় ১৬ ফিট। প্রায় নয় হাজার কেজি ওজনের এই যুদ্ধবিমানটি ঘণ্টায় ১৫শ’ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে এবং ৩২০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
যুদ্ধবিমানটিতে সরঞ্জাম হিসেবে রয়েছে একটি এম-৬১এ১ ২০ এমএম মাল্টি ব্যারেল ক্যানন। এছাড়া যুদ্ধবিমানটি ৬টি এয়ার-এয়ার, এয়ার-সারফেস এবং এয়ার-শিপ ক্ষেপণাস্ত্রও বহন করতে পারে।
যুদ্ধবিমানটি নানা সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, তুরস্ক ও মিশরের হয়ে এর সক্ষমতা দেখিয়েছে।
অন্যদিকে, সুখোই মডেলের যুদ্ধবিমানগুলো রাশিয়ায় তৈরি। এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হলো সুখোই-৩০। ভারতীয় বিমান বাহিনী এই সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে। এই ফাইটার জেটে রয়েছে ক্যানার্ড নামে অতিরিক্ত দু’টি পাখা। এই ক্যানার্ড যুদ্ধবিমানের গতি ও ভারসাম্য দারুণভাবে চালকের নিয়ন্ত্রণে থাকে।
থ্রাস্ট-ভেক্টর কন্ট্রোল নামে একটি বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমানে। সেই ব্যবস্থা যুদ্ধবিমানটির অভিমুখ নিয়ন্ত্রণে বেশ দক্ষ। থ্রাস্ট-ভেক্টর কন্ট্রোলিংয়ের সুবাদে কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যে অনেক দ্রুত এগিয়ে যায় সুখোই-৩০।
প্রায় ৭৩ ফিট লম্বা এই যুদ্ধবিমানটি ৫৬ শতাংশ জ্বালানিতে ২৪ হাজার ৯০০ কেজি ওজন বহন করতে পারে।
রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও আলজেরিয়া এই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে।
সুখোই-৩০ এর ইঞ্জিন দু’টি। আর এফ-১৬ এর ইঞ্জিন একটি। কিন্তু মোটামুটি একই সময়ে তৈরি এই দুই যুদ্ধবিমানেরই কর্মক্ষমতা প্রায় সমান।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৬
আরএইচএস/এইচএ/