তাদের সেইসময় অতীত হয়েছে। মারা গেছেন তাদের মা-বাবা, অনেক নিকটাত্মীয়।
আল্পসের সুইজারল্যান্ড অংশের ভেলিয়াস ক্যানটন চারণভূমিতে এই যুগলের মরদেহ দু’টি খুঁজে পান স্কি রিসোর্ট গ্লাসিয়ার ৩০০০ এর এক কর্মী। ২ হাজার ৬১৫ মিটার উচ্চতায় লেস দিয়াবলেরটেস রিসোর্টের পাশে পাওয়া মরদেহ দু’টি দেখা যায় জমাটবদ্ধ।
যুগলের মধ্যে স্বামীর নাম মারসেলিন (৩৭)। তিনি ছিলেন পেশায় জুতো মিস্ত্রি। আর স্ত্রী দুমোওলিন (৪০)। পেশায় শিক্ষিকা। সাজানো সংসারে ছিল পাঁচ ছেলে আর দুই মেয়ে।
এই দম্পতির সবচেয়ে কনিষ্ঠ কন্যা উদ্রি লাওসেন্নে (৭৯) বাবা-মাকে চিহ্নিত করেছেন। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে দু’জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশও।
লাওসেন্নের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম জানায়, ১৯৪২ সালের ১৫ আগস্ট ভেলিয়াস ক্যানটন চারণভূমিতে গরুর দুধ সংগ্রহ করতে বের হয়েছিলেন স্বামী-স্ত্রী। সেই যে বের হওয়া, তারপর আর ফেরা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, দু’জনই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে হিমবাহের ফাটলে আটকা পড়েছিল।
দীর্ঘদিন পর বাবা-মার মরদেহের সন্ধান পেয়ে অশীতিপর লাওসেন্নে বলেন, সারাজীবন আমরা হন্য হয়ে বাবা-মাকে খুঁজে বেড়িয়েছি। তারা যে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া চেয়েছিলেন, আশা করি এখন তা আমরা করতে পারবো। দীর্ঘ ৭৫ বছর পর তাদের খোঁজ পেয়ে প্রশান্তি অনুভব করছি।
পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি মরদেহ হিমবাহে আটকে ছিল। হিমবাহ গলার কারণে তাদের মরদেহের বিভিন্ন অংশ ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মরদেহ দু’টির পাশে ব্যাগ, বোতল, জুতো ও অনান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পড়ে থাকতে দেখা যায়। দম্পতির গায়ে ছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়কার পোশাক।
গ্ল্যাসিয়ার ৩০০০ এর পরিচালক ব্রানহার্ড স্যানেন জানান, দু’টি মরদেহই পাশাপাশি শোয়া অবস্থায় ছিল। আমাদের ধারণা এই দম্পতি হিমবাহের ফাটলে আটকে পড়েছিলেন দশকের পর দশক। হিমবাহ গলতে শুরু করায় মরদেহ দু’টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
জিওয়াই/এইচএ/