যুক্তরাষ্ট্রের একটি ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে তেলবাহী একটি ট্যাংকারের সংঘর্ষের ঘটনায় যুদ্ধজাহাজটির নিখোঁজ ১০ নাবিকের মরদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত সোমবার (২১ আগস্ট) ভোর ৫টা ২৪ মিনিটে দক্ষিণ চীন সাগরের সিঙ্গাপুর উপকূলে মালাক্কা প্রণালীর অদূরে ইউএসএস জন ম্যাককেইন নামে ওই মিসাইল ডেস্ট্রয়ার বা ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজটির সঙ্গে আলনিক এমসি নামে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ট্যাংকারের সংঘর্ষ হয়। এতে নিখোঁজ হন যুদ্ধজাহাজের ১০ নাবিক। আহত হন আরো ৫ জন।
সংঘর্ষের ঘটনাটি এশিয়ার জলসীমায় চলতি বছর মার্কিন যুদ্ধজাহাজের দুর্ঘটনার চতুর্থ খবর। ট্যাংকার-যুদ্ধজাহাজ সংঘর্ষ, ১০ মার্কিন নাবিক নিখোঁজ
বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন নেভি ও মেরিন করপোরেশনের ডুবুরিরা ইউএসএস জন ম্যাককেইনের নিখোঁজ ১০ নাবিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
যদিও গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) মার্কিন নেভি অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে। তারপরও ডুবুরিরা ক্ষতিগ্রস্ত যুদ্ধজাহাজটির ডুবে যাওয়া কমপার্টমেন্টে অনুসন্ধান অব্যাহত রাখেন। শেষ পর্যন্ত সেখানেই মিললো নিখোঁজ নাবিকদের মরদেহ।
এর আগে, গত ১৭ জুন আরেক ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস ফিৎসজেরাল্ড ইয়োসুকা উপকূলে একটি পণ্যবাহী জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে ৭ মার্কিন নাবিক নিহত হন। তারও আগে, গত ৯ মে কোরীয় উপদ্বীপ উপকূলে একটি ছোট মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে সংঘর্ষ হয় গাইডেড-মিসাইল ক্রুজার ইউএসএস লেক চ্যামপ্লেইনের। সেখানেও ঘটে আহত হওয়ার ঘটনা।
সংঘর্ষের পর মার্কিন নৌবাহিনী ও সিঙ্গাপুর সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, জাপানের মধ্য-পূর্বাঞ্চলের ইয়োসুকা ঘাঁটি-ভিত্তিক সপ্তম নৌবহরের অংশ যুদ্ধজাহাজ জন ম্যাককেইন দক্ষিণ চীন সাগর পাড়ি দিয়ে সিঙ্গাপুর সমুদ্রবন্দরে ভেড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত প্রণালী মালাক্কা দিয়ে যাচ্ছিল লাইবেরিয়ার ওই তেলবাহী ট্যাংকার। দুর্ঘটনাবশত দু’টি নৌযানই সংঘর্ষে জড়ায়।
এতে যুদ্ধজাহাজ জন ম্যাককেইনের ‘উল্লেখযোগ্য ক্ষতি’ (সাসটেইন ড্যামেজ) হয় এবং কিছু অংশে পানিও ঢুকে পড়ে তুমুল বেগে। যদিও মার্কিন নৌবাহিনীর দাবি, সংঘর্ষের পর যুদ্ধজাহাজটি তার নিজের ক্ষমতায় ফের চলছে এবং সিঙ্গাপুর সমুদ্রবন্দরের দিকেই যাচ্ছে।
সপ্তম নৌবহরের অংশ যুদ্ধজাহাজগুলো মার্কিন মিত্রদের জলসীমায় ঘোরাফেরা করলেও জন ম্যাককেইন ঠিক কী জন্য সিঙ্গাপুর সমুদ্রবন্দরে আসছিল, এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানাতে পারছে না সংবাদমাধ্যম। তবে সপ্তম নৌবহর দাবি করছে, নিয়মিত ‘পরিদর্শন কার্যক্রমের’ অংশ হিসেবেই যুদ্ধজাহাজটি সিঙ্গাপুর সমুদ্রবন্দরে আসছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭/আপডেট: ১২৫২ ঘণ্টা
জেডএস