তার ভাষণ টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে। রাখাইনে চলমান সহিংসতা শুরু হওয়ার পর এই প্রথম এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মুখ খুলবেন তিনি।
অন্যদিকে সেনাবাহিনী থেকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নয়। তারা ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’। এ অভিযোগে চালিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। হত্যার শিকার হয়েছেন দশ হাজারের বেশি।
মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হতয় স্টেট কাউন্সিলর সু চির ভাষণের ব্যাপারে আগেই নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি জানান, শান্তিতে নোবেলজয়ী ৭২ বছর বয়স্ক এই নেত্রী ‘জাতীয় ঐক্য ও শান্তির আহ্বান’ জানিয়ে ভাষণ দেবেন। মিয়ানমারে চলমান সংকট মোকাবেলার জন্যই তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেননি। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশেই তাকে বেশি প্রয়োজন।
দেশে প্রয়োজন হলেও তিনি আসলে ব্যর্থ, এই মন্তব্য সর্ব মহলে। যদিও রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার ‘কৌশল’ চুপ থাকাই। তাই তাদের ওপর যখনই হামলা হয়েছে সু চি কথা বলেননি। এবার গণহত্যা, নির্যাতন বন্ধে তার কোনো উদ্যোগ নেই, এতে মানবতাবাদী বিশ্বনেতারাও হতাশ।
২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত বার্মার সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রচারাভিযানের সময়ও সু চি রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার ইস্যুটি এড়িয়ে যান। তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্ট পদে না থাকলেও স্টেট কাউন্সিলরসহ (সরকার প্রধান) সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আছে।
সু চির দলও দেশটিতে দীর্ঘ সামরিক শাসনের সময় দমনপীড়ন ও বর্বরতার শিকার হয়েছে (যদিও এনএলডির অধিকাংশ নেতাই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী)। অন্যায়ের প্রতিবাদ তাই সু চি করবেন এমন আশা করেন না রোহিঙ্গারা।
এদিকে সু চি গত বছর মিয়ানমারে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বলেছিলেন, রাখাইনের মুসলমান সংখ্যালঘুদের ‘রোহিঙ্গা’ নামে যেন অভিহিত না করা হয়। ফলে প্রশ্ন থেকে যায় তারা তবে কী?
ভাষণে যদি সেনাবাহিনী প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের সুরে সু চি বলেন, রোহিঙ্গারা তার দেশের নয়, তবে কি মিয়ানমারে শান্তিও রোহিঙ্গাদের জন্য নয়! তবে কি তার ‘শান্তির আহ্বান’ কেবল অন্য জাতিগোষ্ঠীর জন্যই?
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭
আইএ/জেডএম