বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেওয়া এক বিবৃতিতে আইওএম প্রধান রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এতে তিনি বলেন, সেখানে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার ক্ষুদ্র অংশই প্রকাশ হচ্ছে গণমাধ্যমে।
গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ শুরু হলে তা থেকে বাঁচতে প্রায় পৌনে ৫ লাখ মানুষ সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্য মতে, সেখানে ৩ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। ধর্ষণ করেছে শত শত কিশোরী, তরুণী ও গৃহবধূকে। এই মানবিক সংকটে রোহিঙ্গাদের সহায়তা কার্যক্রম সমন্বয় করছে আইওএম।
বিবৃতিতে ল্যাসি সুইং বলেন, আগস্টের পর বাংলাদেশে পালিয়ে আসা কয়েক ডজন রোহিঙ্গা নারীকে চিকিৎসা দিয়েছেন আইওএমের চিকিৎসকরা। সে নারীরা যে যৌন সহিংসতা ও লিঙ্গ-ভিত্তিক নিপীড়িনের শিকার হয়েছেন, তা গুরুতর। কিন্তু গণমাধ্যমে যা আসছে তা মূল ঘটনার তুলনায় একেবারেই গৌন।
আইওএম প্রধান তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, নারী, শিশু বিশেষভাবে টার্গেট করা হচ্ছে। বালক-যুবকদেরও নির্যাতনের টার্গেট করা হচ্ছে। সেখানকার রোহিঙ্গারা এমন আরও সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে কেবল লিঙ্গ, বয়স এবং সামাজিক অবস্থানের কারণে।
যৌন সহিংসতার মুখ থেকে পালিয়ে বেঁচে আসা নারীদের আইওএম সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছে জানিয়ে সংস্থার এ মহাসচিব বলেন, কেবল যেসব ঘটনা জানা গেছে, তার মাধ্যমে মিয়ানমারে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার মাত্রা জানার চেষ্টা করা যাবে বলে আমি জোর দিতে পারি না।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা তরুণী-গৃহবধূদের পাশাপাশি অনেক কিশোরীকেও ধর্ষণ করে হত্যা করছে। নিপীড়ন করছে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে। পুড়িয়ে মেরেছে ঘরে বন্দি করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে। গণধর্ষণের পর জঙ্গলে ফেলে দেওয়া অনেক রোহিঙ্গা নারীই অন্যদের সাহায্যে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে এখন আইওএমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংকট পরিদর্শন শেষে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গিয়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) প্রধান ফিলিপো গ্রান্দি বলেন, এই সংকটের সৃষ্টি মিয়ানমারে এবং সমাধানও মিয়ানমারের কাছে। তাদেরই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
এই সহিংসতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠলে সম্প্রতি ভাষণ দিয়ে সংকটের সমাধানে আগ্রহ দেখান মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। কিন্তু তিনি নির্বিচারে মানুষ হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করলে তারও সমালোচনা শুরু হয় বিশ্বব্যাপী। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকে বসছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৭
এইচএ/
** রোহিঙ্গারা সম্ভবত সহসা স্বদেশে ফিরছে না: জাতিসংঘ