ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মা আসামি কাঠগড়ায়, তার শিশুকে দুধ খাওয়ালেন নারী পুলিশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৭
মা আসামি কাঠগড়ায়, তার শিশুকে দুধ খাওয়ালেন নারী পুলিশ আসামির শিশু সন্তানকে দুধ খাইয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন লিনা। ছবি: সংগৃহীত

মা আসামি আদালতের কাঠগড়ায়। তার ৪ মাস বয়সী শিশু সন্তান পুলিশের এক নারী সদস্যের কোলে। এ সময় সেই শিশুটির পেলো ভীষণ ক্ষিদে। ক্ষিদের জ্বালায় কাঁদতে শুরু করলো সে। 

তাকে কোলে রাখা সেই নারী পুলিশ দুঃচিন্তায় পড়ে যান। তিনি নিজেও সদ্য মা হয়েছেন।

ক্ষিদের জ্বালায় এক শিশু সন্তানের কান্না তার মায়ের কাছে কেমন লাগে, সেটা খুব ভালো করেই বোঝেন তিনি। সেই বোধ থেকেই ওই আসামির শিশু সন্তানকে বুকের দুধ খাইয়ে দেন মাতৃত্বের টানে। সেস্নেহে পাড়িয়ে দেন ঘুমও।

কোটি মানুষের হৃদয়জয়ী এই নজির গড়েছেন চীনের মধ্যাঞ্চলের শানঝি জিংঝং উচ্চমাধ্যমিক গণআদালতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য হাও লিনা। তার গত ২৩ সেপ্টেম্বরের ঘটনাটি ধরা পড়ে এক সহকর্মীর মোবাইল ফোনে। সেই ছবি প্রথমে আদালতের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা হয়। এরপর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর থেকেই অভিনন্দন ও ভালোবাসার জোয়ারে সিক্ত হচ্ছেন তরুণী ‘মা’ লিনা। মাতৃত্বের পরিচয় দিয়ে সবার ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন পুলিশ সদস্য লিনাআদালত এবং লিনার সহকর্মীদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম জানায়, ৩৩ জনের অর্থ আত্মসাৎ ও তহবিল গঠনে জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে লি নামে ওই শিশুটির মায়ের বিচার চলছে। সেদিন তাকে কাঠগড়ায় তোলা হলে বাইরে দায়িত্বরত লিনা ও তার সহকর্মীদের কাছে শিশুটিকে রাখতে বলেন আদালত।

কিছুক্ষণ পরই শিশুটি কাঁদতে থাকে। এসময় মাতৃত্বের টানে হৃদয় গলে যায় লিনার। শিশুটির মায়ের কাছ থেকে অনুমতি পেয়ে আদালতের ভবনের এক কোণে গিয়ে তাকে বুকের দুধ খাওয়াতে থাকেন লিনা।

এই নারী পুলিশ সদস্য বলছিলেন, ‘বাচ্চাটা এমনভাবে কাঁদছিল, আমরা দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যাই। আমি নিজেও সম্প্রতি মা হয়েছি। আমি বুঝতে পারি, সন্তানের এমন কান্না তার মায়ের জন্য কতটা খারাপ লাগার। তখন আর অপেক্ষা না করে বাচ্চাটাকে দুধ খাইয়ে শান্ত করি। ’বিচারকার্য শেষে সেই মায়ের হাতে তার সন্তানকে তুলে দেন পুলিশের এক নারী সদস্যআদালত সূত্র জানায়, আদালত থেকে বেরোনোর সময় এই কথা শুনে কান্না থামাতে পারছিলেন না শিশুটির মা লি।

লি এবং জনতার প্রশংসায় সিক্ত লিনা বলছিলেন, ‘এই অবস্থায় প্রতিটি পুলিশ সদস্যই একই কাজ করতেন। মা হিসেবে আমিও চাইতাম, কেউ আমার সন্তানের জন্য এভাবে এগিয়ে আসুক। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।