ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন যেতে লাগবে মাত্র ২৯ মিনিট!

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৭
নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন যেতে লাগবে মাত্র ২৯ মিনিট! নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন যেতে লাগবে মাত্র ২৯ মিনিট!

ঢাকা: বেশ কয়েক বছর ধরেই মঙ্গলগ্রহে মানব বসতি স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করে আসছেন কানাডিয়ান আমেরিকান ধনকুবের ও উদ্ভাবক এলন মাস্ক। এ উদ্দেশ্যেই তিনি ২০০২ সালে গড়ে তোলেন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি মঙ্গল অভিযানের সব প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। 

সম্প্রতি এলন মাস্ক প্রকাশ করলেন, এ প্রজেক্টের একটি নতুন সম্ভাবনা। তার নতুন প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হলে মানুষ নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন ভ্রমণ করতে পারবে মাত্র ২৯ মিনিটে।

এমনকি পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে বিপরীত প্রান্তে চলে যাওয়া যাবে এক ঘণ্টারও কম সময়ে।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) অস্ট্রেলিয়ায় ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনটিকাল কংগ্রেসে দেওয়া বক্তৃতায় মাস্ক জানান, স্পেসএক্স মঙ্গল অভিযানের জন্য যে রকেট বানানোর প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে, তা দিয়ে পৃথিবীর অভ্যন্তরেও যাতায়াত করা যাবে শিগগির।

তিনি বলেন, ‘আমরা মঙ্গল বা চাঁদে যাওয়ার জন্য যেসব মহাকাশযান বানাতে যাচ্ছি, সেগুলো পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ যাতায়াতে ব্যবহার করলে ক্ষতি কী?’

তিনি সম্মেলনে এমন এক মহাকাশযানের মডেল উপস্থাপন করেন, যা শতাধিক যাত্রী ধারণ করতে সক্ষম। এ মহাকাশ যানটির সর্বোচ্চ গতি বেগ ১৭ হাজার মাইল প্রতি ঘণ্টা। এ গতিতে নিউইয়র্ক থেকে সাংহাই পৌঁছাতে লাগবে ৩৯ মিনিট, নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন ২৯ মিনিট এবং ব্যাংকক থেকে দুবাই পৌঁছাতে লাগবে ২৭ মিনিট।

বর্তমান যুগের সেরা উদ্ভাবকদের মধ্যে এলন মাস্ক অন্যতম
কেবল তাই নয়, পৃথিবীর কৃত্রিম উপগ্রহের জন্য যাত্রী ও পণ্য পাঠানো যাবে এতে। এর মাধ্যমে আলাদা কৃত্রিম উপগ্রহও উৎক্ষেপণ করা যাবে। চাঁদ ও মঙ্গলে তৈরি করা যাবে মানব-ঘাঁটি। রকেটটির নাম দেওয়া হয়েছে বিএফআর।

বর্তমান যুগের সেরা উদ্ভাবকদের মধ্যে এলন মাস্ক অন্যতম। তার নকশায় তৈরি হয়েছে টেসলা ইনকর্পোরেশনের অভিনব বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি। তিনি এক্সকমের প্রতিষ্ঠাতা। এক্সকম পরবর্তীতে কনফিনিটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ‘পেপাল’ নামে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদায় তিন হাজার একর জমির উপর চলছে টেসলার  গিগাফ্যাক্টরি নির্মাণ কাজ।  

২০১৬ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের তালিকায় এলন মাস্কের অবস্থান ছিল ২১ নম্বরে। মাস্কের সব উদ্ভাবন ও পরিকল্পনা যেন পৃথিবীকে আমূল বদলে দিতে এবং মহাবিশ্বকে মানুষের হাতের মুঠোয় এনে দিতে।

এলন মাস্ক এ বছরের শুরুতে ঘোষণা দিয়েছিলেন, আগামী বছর স্পেসএক্স দু’জন মানুষকে চাঁদে পাঠাতে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে চাঁদে ঘাটি তৈরিরও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। মাস্ক মনে করেন, বহির্বিশ্বে মানব অভিযান পরিচালনার সুবিধার্থে চাঁদে একটি ঘাঁটি থাকা জরুরি।  

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার পরিচালক জিম ব্রাইডেস্টাইনও চাঁদে ঘাটি তৈরির আগ্রহ প্রকাশ করেন। গত বছর একটি ব্লগ পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘চাঁদে পানি আবিষ্কারের পর থেকে আমি মনে করি, চাঁদে আমাদের একটি স্থায়ী আউটপোস্ট গড়ে তোলা উচিৎ। রোবটের মাধ্যমে এ ঘাঁটি পরিচালনা করা হবে এবং তা রক্ষণাবেক্ষণের কাজে মাঝে মাঝে মানুষ পাঠানো হবে’।

চাঁদে ঘাঁটি স্থাপনের প্রজেক্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নাসা। আর এই প্রজেক্টটি লুফে নেয় জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন।  
এবার জেফ বেজোস সম্পর্কে কয়েকটি কথা না বললেই নয়। জেফ বেজোস অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা এবং জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের মালিক। গত ২৭ জুলাই মাত্র একদিনের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বিল গেটসকে টপকে গিয়েছিল তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ।

শৈশব থেকেই বেজোসের ইচ্ছে ছিল মহাকাশ অভিযাত্রী হওয়ার। বড় হওয়ার পরও বহির্বিশ্বের প্রতি তার আগ্রহ রয়ে গেছে অপরিবর্তিত। এ আগ্রহ থেকেই ২০০০ সালে তিনি গড়ে তোলেন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্লু অরিজিন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৭
এনএইচটি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।