ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা: মুখোমুখি মাদ্রিদ-বার্সেলোনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৭
কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা: মুখোমুখি মাদ্রিদ-বার্সেলোনা কাতালোনিয়ার রাস্তায় স্বাধীনতার পক্ষে র‌্যালি

স্পেনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করতে আঞ্চলিক পার্লামেন্টে প্রস্তাবনা জমা দিয়েছেন স্থানীয় স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সরাসরি শাসনের’ হুঁশিয়ারির জবাবে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) এই প্রস্তাবনা জমা দিয়েছেন তারা।

কেন্দ্রীয় সরকারের সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটে কাতালোনিয়ার স্বায়ত্তশাসন বাতিল করতে আলোচনাকে সামনে রেখে স্থানীয় সময় দুপুরে এ খবর দিয়েছেন বার্সেলোনার এক মুখপাত্র। শুক্রবারই সিনেটে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয় সিনেটরদের প্রতি কাতালান স্বায়ত্তশাসন বাতিলের আহ্বান জানান।

একইসঙ্গে স্বাধীনতার জন্য গণভোটকারী আঞ্চলিক সরকারের প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজদেমন্তসহ মন্ত্রীদের অপসারণের আহ্বান জানান।

এই হুমকির প্রেক্ষিতে বার্সেলোনার ওই মুখপাত্র বলেন, মাদ্রিদ আলোচনার টেবিলে এগিয়ে না আসায় স্বাধীনতা ঘোষণার প্রস্তাব পার্লামেন্টে তুলছেন কাতালান জনপ্রতিনিধিরা। প্রস্তাবের শুরুতে বলা হয়েছে- ‘আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী স্বাধীন কাতালোনিয়ার ঘোষণা দিচ্ছি’। এই প্রস্তাবটি পার্লামেন্টে উত্থাপনের পর সবাই একযোগে ‘হ্যাঁ’ বলবেন। সেখানে গণপ্রজাতন্ত্রী, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক ও সমাজবাদী রাষ্ট্র কাতালোনিয়ার জন্য সংবিধান আহ্বানও থাকছে।

গত ১ অক্টোবর গণভোটের পর পাল্টাপাল্টি বক্তব্য এবং গণভোট ইস্যুতে পরস্পরের স্বাধীনতা ঘোষণা ও স্বায়ত্তশাসন বাতিলের হুমকির ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সিনেটে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী রাজয়। তিনি আবেগপূর্ণ ভাষণে সিনেটরদের উদ্দেশে বলেন, যখন কোনো পথই খোলা থাকে না, তখন সংবিধান সুরক্ষায় কাতালোনিয়ার স্বায়ত্তশাসনই বাতিল করতে হবে। এই পথ সুগম করতে কাতালান ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ নেতাদের ক্ষমতা থেকে অপসারণ করতে হবে। সুতরাং সিনেটকে সেরকম পদক্ষেপই অনুমোদন দিতে হবে। কাতালান স্বায়ত্তশাসন বাতিলে সংবিধানের ১৫৫ নম্বর অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নই একমাত্র উপায়।

এই ভাষণটি শোনার পর কাতালোনিয়ার ক্ষমতাসীন জোটের ওই মুখপাত্র জানান, বার্সেলোনাও তার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং সংসদে স্বাধীনতা ঘোষণার প্রস্তাব উত্থাপন করছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা উভয়পক্ষই শুক্রবার যথাক্রমে সিনেট ও পার্লামেন্টে সেশন লম্বা করতে পারে। সিনেটে কাতালোনিয়ার স্বায়ত্তশাসন বাতিলের কোনো পদক্ষেপ পাস হয়ে গেলে কাতালান পার্লামেন্টেও পাস হয়ে যেতে পারে আঞ্চলিক স্বাধীনতার ঘোষণা।

যদিও কাতালান পার্লামেন্টে মাদ্রিদের অনুগত রাজনীতিকেরা প্রস্তাব উত্থাপনের অধিবেশন বয়কট করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন, তবে এরইমধ্যে এই প্রস্তাবের পক্ষে কাতালান নেতাদের স্বাগত জানাতে রাস্তায় নেমেছে হাজারো মানুষ।

১৯৭০ এর দশকের মাঝামাঝিতে স্পেনের স্বৈরশাসক জেনারেল ফ্রাঙ্কো মারা গেলে গণতান্ত্রিক যুগে প্রবেশ করে দেশটি। এরপর ১৯৭৮ সালে অনুমোদিত সংবিধানে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলগুলোকে বাগে রাখার জন্য রাখা হয় ১৫৫ অনুচ্ছেদ। এই অনুচ্ছেদকে ‘পরমাণু বিকল্প’ হিসেবে দেখা হয়। এতোদিন পর্যন্ত এই অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নের প্রয়োজন পড়েনি স্পেনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।