ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে হত্যার জন্য মেক্সিকান মাদক চোরাকারবারিকে ভাড়ার করার মূল্য দিতে হবে ইরানকে। ইরানকে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে সৌদি আরব।
ইরানের প্রতি সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এই হুমকি আসল যখন ওবামা প্রশাসন ওই হত্যা পরিকল্পনাকে এই অঞ্চলে ‘বিপজ্জনক বাড়াবাড়ি’ বলে অভিহিত করেছে।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জে কারনি বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে, হত্যা পরিকল্পনাটি ইরানের বিশেষ বাহিনী কুদসের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাই করেছেন। ’ মার্কিন প্রশাসনের ভেতর থেকেই বিশেষ করে রক্ষণশীল ডানপন্থীরা ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেও তার বিরোধিতা করছে কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারকরা।
কারনি গত বুধবার জানান, প্রেসিডেন্ট ওবামা বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে ওই ষড়যন্ত্রের বিষয়ে কথা বলেছেন এবং এই কাজটি যে আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন সে ব্যাপারে তারা একমত পোষণ করেছেন।
তবে ষড়যন্ত্রের হাত থাকার অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে ইরান। দেশটির কর্মকর্তারা উল্টো অভিযোগ করেছেন, শিয়া ও সুন্নি মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ উস্কে দিতেই ওয়াশিংটন এই মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে।
শিয়া মুসলিমরা ইরানে আর সুন্নি মুসলিমরা সৌদি আরবে সংখ্যা গরিষ্ঠ।
তারা আরও বলছেন, সাম্প্রতিক ওয়ালস্ট্রিট বিক্ষোভ থেকে জনগণের মনোযোগ সরাতে বারাক ওবামা এই গল্প ফেঁদেছেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ গত মঙ্গলবার জানায়, ওয়াশিংটনে সৌদি রাষ্ট্রদূত আদেল আল জুবায়েরকে হত্যা পরিকল্পনার জন্য দুই জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের একজনের নাম মানছুর আরবাবসিয়ার, তিনি ইরানের নাগরিক। মানছুর এই কাজের জন্য মেক্সিকান মাদক চোরাকারবারি গ্রুপ জেটাকে ভাড়া করেছিল। অপর ব্যক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি ইরানেই আছেন।
ওয়াশিংটনে সৌদি আরবের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান যুবরাজ তুর্কি আল ফয়সাল লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই ঘটনার সাক্ষ্য-প্রমাণ রীতিমতো হতবাক করার মতো এবং এর জন্য ইরানের কর্মকর্তাদের দায় আছে তা স্পষ্ট। ’
তিনি বলেন, ‘এটা গ্রহণযোগ্য নয়, এর জন্য ইরানের কাউকে মূল্য দিতে হবে। ’
ইরান-সৌদি সম্পর্কের টানাপোড়েন বহুদিন ধরেই চলছে। তবে এ বছর বাহরাইনে বিক্ষোভ দমনে সৌদি আরব সেনা পাঠালে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। বাহরাইনে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই শিয়া মুসলিম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১১