নিউইয়র্ক: বিশ্ব অর্থনীতিতে পুঁজিবাদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশের প্রধান শহরগুলোতে লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজি বাজারের প্রাণকেন্দ্র ওয়ালস্ট্রিটে অবস্থানকারী বিক্ষোভকারীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্বব্যাপী মানুষ জেগে উঠছে।
এদিকে শনিবার নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অশ্বারোহী পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন অংশ থেকে কমপক্ষে ৭৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
‘ওয়ালস্ট্রিট দখল কর’ আন্দোলনের কমপক্ষে ৪৫ জনকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। এদিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেয়। বিক্ষোভে পর্যটকরাও শরিক হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
নিউইয়র্কের কেন্দ্রে ৪৬ স্ট্রিট এবং সেভেনথ অ্যাভেনিউয়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়।
বিক্ষোভকারীরা টাইমস স্কয়ারে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয় এবং সেখান থেকে অনেককে আটক করে।
এর আগে বিক্ষোভকারীরা সিটি ব্যাংকের একটি শাখায় ঢুকার চেষ্টা করলে সেখান থেকে ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে বলে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের মুখপাত্র জানিয়েছেন।
আটক ৭৫ জনের মধ্যে ৫ জনকে শহরের অন্য এলাকা থেকে মুখোশ পরা অবস্থায় আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
ছাত্র, যুবক এবং ট্রেড ইউনিয়নকর্মীরা ‘আমরাই ৯৯ শতাংশ’, ‘আমরাই জনগণ, ‘ওবামা তোমার সমর্থন আমাদের দরকার’ লিখিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয়। এর মধ্যে বেড়াতে আসা অনেক পর্যটক পরিবার নিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্ম হন।
এদিকে ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল মলে ২ থেকে ৩ হাজার লোক জমায়েত হয়েছিল। এখানে বর্ণবাদ বিরোধী বিখ্যাত নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের ছেলে তৃতীয় মার্টিন লুথার কিং জনতার উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা গাড়ি শিল্পকে দেউলিয়া করে দিয়েছি, ওয়ালস্ট্রিটকে আমরা দেউলিয়া করলাম। এখন যুক্তরাষ্ট্রের খেটে খাওয়া মানুষকে দেউলিয়া করার সময় সমুপস্থিত। এই অসন্তোষ এই সব কারণেই। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, বাবা বেঁচে থাকলে তিনিও আজকে এই মিছিলে যোগ দিতেন। ’
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে ২০০ বিক্ষোভকারী ব্যাংক অব আমেরিকার ভেতরে ঢুকতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এরা সবাই তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে চাইছিল।
মিয়ামি, যে শহরে বিক্ষোভের নজির নেই বললেই চলে, সেখানে শনিবার এক হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করেছে।
এছাড়া এদিন ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, লাতিন আমেরিকা, এশিয়া এবং আফ্রিকার ৮২টি দেশের ৯৫১টি প্রধান শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। অস্ট্রেলিয়াতে কয়েক লাখ মানুষ জড়ো হয়েছিল বলে জানা গেছে।
অর্থনৈতিক বৈষম্য, বেকারত্ব, দুর্নীতি, পুঁজিবাদের দৌরাত্ম্য এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই বিশ্বের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছে মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১১