ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

১৩ একনায়কের পতন

ডেস্ক রিপোর্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১১
১৩ একনায়কের পতন

ঢাকা: লিবিয়ার নেতা কর্নেল মুয়াম্মার মোহাম্মদ আবু মিনায়ার আল-গাদ্দাফির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিশ্বের ইতিহাসের ১৩ জন একনায়কের পতন ঘটলো। ইতিহাস বিখ্যাত একনায়কদের বেশিরভাগই আর বেঁচে নেই।

কয়েকজনের বিচার চলছে।

বেনিতো মুসোলিনি (১৮৮৩-১৯৪৫): ভোটে জিতে ১৯২২ সালে ইতালির প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯২৫ থেকে ‘দ্বিতীয় দুচে’ নাম নিয়ে আত্মপ্রকাশ। ফ্যাসিবাদের জনক। স্পেনে পালানোর পথে ধরা পড়েন। ২৮ এপ্রিল, ১৯৪৫ গুলিতে নিহত।

অ্যাডল্ফ হিটলার (১৮৮৯-১৯৪৫): জার্মানিতে ভোটে জিতে ১৯৩৩ সালে ক্ষমতায় আসেন। নাৎসিবাদের প্রবক্তা। ১৯৩৪ সালে নিজেকে ‘ফ্যুয়োরার’ বা ‘প্রভু’ হিসেবে ঘোষণা করেন। ৩০ এপ্রিল ১৯৪৫, আটক এড়াতে বাঙ্কারেই আত্মহত্যা।

মহম্মদ রেজা শাহ পাহলভি (১৯১৯-১৯৮০): ইরানের শাহ নামেই বেশি পরিচিত। ১৯৪১ সাল থেকে লাগাতার ক্ষমতায়। ১৯৭৯ সালে রাজতন্ত্রের পতন, ক্ষমতায় ইরান ইসলামি বিপ্লবের নেতা খোমেইনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে শেষে মিশরে মৃত্যু।

ইদি আমিন (১৯২৫-২০০৩): সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে উগান্ডার ক্ষমতা দখল করেন ১৯৭১ সালে। ১৯৭৯ সালে তানজানিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ এবং ক্ষমকার অবসান। পালিয়ে প্রথমে লিবিয়া পরে সৌদি আরবে আশ্রয় নেন। সেখানেই মৃত্যু।

পল পট (১৯২৫-১৯৯৮): কাম্বোডিয়ার নেতৃত্ব দখল ১৯৭৫ সালে। চার বছর পর ভিয়েতনামের সঙ্গে যুদ্ধের সময় পালিয়ে জঙ্গলে আশ্রয়। ১৯৭৯ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত জঙ্গলে থেকেই কিছু অনুগামী নিয়ে স্বঘোষিত শাসক। ১৯৯৮ সালে বিরোধীদের হাতে গৃহবন্দি।

অগস্তো পিনোশে (১৯১৫-২০০৬): সামরিক অভ্যুত্থান করে চিলির ক্ষমতা দখল করেন ১৯৭৩ সালে। ১৯৮৭ সালে গণভোটে গণতন্ত্রের বিজয়। ১৯৯০ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর। ১৯৯৮ সালে ব্রিটেনে গ্রেপ্তার। অসুস্থতার জন্য ২০০০ সালে মুক্তি।

নিকোলাই চসেস্কু (১৯১৮-১৯৮৯): কমিউনিস্ট রোমানিয়ার শীর্ষ পদে ১৯৬৭ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত। ডিসেম্বর ১৯৮৯ সালের বুখারেস্টে গণবিক্ষোভ, পূর্ব ইউরোপ জুড়ে বিপ্লবের হাওয়া। চসেস্কুর পতন। দু’ঘণ্টার বিচারপর্ব শেষে সস্ত্রীক মৃত্যুদ-।

সাদ্দাম হোসেন (১৯৩৭-২০০৬): ইরাকের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি, ১৯৭৯ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ক্ষমতায়। ২০০৩ সালে ইরাকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রবাহিনীর যুদ্ধ ঘোষণা। ২০০৪ সালে ধরা পড়েন। ২০০৬ সালে ফাঁসি হয় তার।

চার্লস টেলর (১৯৪৮- ): ১৯৮৯ সাল থেকে লাইবেরিয়ার প্রথম গৃহযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। ১৯৯৭ সালে ভোটে জিতে ক্ষমতায়, যদিও নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৯ সালে আবারও গৃহযুদ্ধ। ২০০৩ সালে ক্ষমতাচ্যুত হন। এখন বিচারাধীন।

জ্যাঁ ক্লদ দ্যুভেলিয়র (১৯৫১- ): হাইতির প্রেসিডেন্ট হন ১৯৭১ সালে। ১৯৮৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকেন। গণবিদ্রোহে ক্ষমতাচ্যুতি তারপর স্বেচ্ছা-নির্বাসন ফ্রান্সে। এ বছর দেশে ফিরে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

জয়েন আল-আবেদিন বেন আলি (১৯৩৬- ): প্রথমে তিউনিশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। পরে সামরিক অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট। ১৯৮৭ সাল থেকে টানা ক্ষমতায় থাকেন । এ বছর গণবিদ্রোহে (জেসমিন বিপ্লব) ক্ষমতাচ্যুতি, পালিয়ে সৌদি আরবে আশ্রয়।

হোসনি মোবারক (১৯২৮-): মিশরের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন ১৯৮১ থেকে। চলতি বছর আর ভোটে লড়বেন না বলেছিলেন। কিন্তু বিক্ষোভের মুখে আগেই ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। এখন বিচারাধীন।

মুয়াম্মার মোহাম্মদ আবু মিনায়ার আল-গাদ্দাফি (১৯৬৯-২০১১): ১৯৬৯ সালে ২৭ বছর বয়সের তরুণ গাদ্দাফি সেনাবাহিনীর কর্নেল হন। অল্প কিছু সহযোগী নিয়ে রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেন রাজা ইদ্রিসকে। ১৯৭৭ সালে তিনি দেশের নাম বদলে ‘গ্রেট সোশ্যালিস্ট পপুলার লিবিয়ান আরব জামাহিরিয়াহ’ করেন। ২০০৮ সালে আফ্রিকান শাসকদের এক সম্মেলনে গাদ্দাফিকে ‘আফ্রিকার রাজাদের রাজা’ ঘোষণা করা হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু হয়। ২০ অক্টোবর বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত হন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।