তিউনিস: আরব বসন্ত পরবর্তীতে তিউনিশিয়ায় প্রথমবারের মতো ভোট শুরু হয়েছে। নির্বাচনের মূল প্রতিদ্বন্দী দল স্যেকুলারিস্ট বনাম ইসলাপন্থী।
তিউনিশিয়ায় গণজাগরনের পর একে একে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে। গত জানুয়ারি মাসে দেশটির সাবেক শাসক জিনে আল আবিদিনে বেন আলী প্রতিবাদকারীদের ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন।
গত ডিসেম্বরে মুহামেদ বুয়াজিজি নামের একজন ফল বিক্রেতা তার গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করলে পুরো তিউনিশিয়ায় বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই উঠে আসে দুর্নীতি, বেকারত্ব এবং দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিসহ নানাবিধ অভ্যন্তরীন সমস্যা।
দেশটির বিভিন্ন পর্যালোচকরা মনে করছেন, এই নির্বাচন পরবর্তী ক্ষমতাপ্রাপ্ত সরকারের প্রধান কাজ হবে দেশের অভ্যন্তরীন সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান করা।
নির্বাচনের প্রার্থীরা ২১৮টি আসনের জন্য প্রতিদ্বন্ধিতা করছে। এর মধ্য দিয়ে দেশটির সংবিধান সংশোধনসহ ভবিষ্যৎ তিউনিশিয়ার রুপকল্প নির্ধারনে কাজ করবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। উল্লেখযোগ্য পরিমান দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এই প্রতিদ্বন্ধিতায় অংশ নিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া একজন তিউনিশিয়ার নাগরিক বলেন, ‘আমি ওই রাজনৈতিক দলগুলোকে বিশ্বাস করি না। বিশেষত যারা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করতে চায়। ’
অপরদিকে এন্নাহাদা পার্টি সম্পর্কে বলতে গিয়ে একজন নাগরিক বলেন, ‘আমাদের দেশ মুসলিম প্রধান দেশ। এন্নাহাদা ইসলামের কাছাকাছি পার্টি। আমি চাই তিউনিশিয়ার সমাজে ব্যাপক ধর্মীয় প্রভাব বজায় থাকুক। ’
এন্নাহাদা ইসলামপন্থী জনগণের মন জয় করে নিলেও তিউনিশিয়ার অনেক জনগণ তার এই উত্থানে শংকিত। কারণ তারা মনে করছে, এন্নাহাদার জয়ের ফলে দেশটির রেস্টুরেন্টগুলো ধ্বংসের পথে যাবে এবং নারীরা চাকরি করার জন্য বাহিরে যেতে পারবে না।
আহমেদ নাজিব চেব্বি নামের একজন প্রথম সারির স্যেকুলারিস্ট বলেন, ‘আমাদেরকে ইসলামী পার্টিগুলোর হুমকির মুখে থাকতে হবে। ’
কিন্তু এন্নাহাদা পার্টির সিনিয়র সদস্য রশিদ ঘানুচ্চি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে ভয়-ভীতিমূলক বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ’
পূর্বে এন্নাহাদা পার্টির বিভিন্ন বিতর্কিত অবস্থান থাকলেও আরব বসন্ত বিপ্লবের সময়ে তাদের মারদাঙ্গা ভূমিকার জন্য জনগণের কাছাকাছি চলে এসেছে। অপরদিকে স্যেকুলারিস্ট পার্টিগুলোর বরাবরের চেয়ে সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু এন্নাহাদার তুলনায় কম।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১১