ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কট্টরপন্থী ইসলামি রাষ্ট্র হবে লিবিয়া?

জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১১
কট্টরপন্থী ইসলামি রাষ্ট্র হবে লিবিয়া?

ঢাকা: লিবিয়ার নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির ৪২ বছরের শাসনের এক প্রকার অবসান ঘটেছে গত আগস্ট। এর পর গত বৃহস্পতিবার বিদ্রোহীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হলেন গাদ্দাফি।

রোববার স্বাধীনতা ঘোষণা করল দেশটির অন্তর্বর্তী পরিষদ (এনটিসি)।

আপাত দৃষ্টিতে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসনের কবল থেকে বেরিয়ে গণতেন্ত্রর পথে উত্তরণে সম্ভাবনার দরজা খুলে গেছে লিবিয়ার সামনে। কিন্তু আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার সময় ইসলামি আইন জারির ব্যাপারে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন এনটিসির শীর্ষ নেতা।

এনটিসির চেয়ারম্যান মোস্তফা আবদুল জলিল যাকে বর্তমান লিবিয়ার কার্যত প্রেসিডেন্ট বলে মনে করা হচ্ছে, ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন, লিবিয়ার ভবিষ্যৎ সংবিধান শরিয়া ভিত্তিক হবে।

শরিয়া হলো ইসলামের মৌলিক বিধি-বিধান। তবে এই শরিয়া আইনকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। যেমন, মিশরে হোসনি মোবারকের ধর্মনিরপেক্ষ সরকারেও এমন কিছু আইন চালু ছিল। তার পতনের পরও আইনগুলো চালু রয়েছে।

আবদুল জলিল অবশ্য এর মধ্যেই একধাপ এগিয়ে গেছেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ডিক্রি জারি করে বহু বিবাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছেন। গাদ্দাফির সময় বহু বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল। আবদুল জলিল বলছেন, এটা শরিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

অনেকে ভাবছেন, এবার লিবিয়ার অর্থনীতি পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে আরও বেশি অঙ্গীভূত হবে। তাদের এই আশায় গুড়ে বালি। কারণ আবদুল জলিল ঘোষণা দিয়েছেন, শরিয়ার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে লিবিয়ার ভবিষ্যত ব্যাংক নীতিতে সুদ নিষিদ্ধ করা হবে।

তিনি বলেন, ‘সুদ মানুষের মধ্যে ব্যাধি ছড়ায় এবং ঘৃণার সৃষ্টি করে। ’

ইতোমধ্যে যারা ব্যাংক থেকে ঋণ করেছেন তাদের মধ্যে কম পরিমাণের ঋণ মওকুফ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আবদুল জলিল।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো উপসাগরীয় দেশগুলো এবং বিশ্বের আরও কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্র শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছে। তবে পাশাপাশি পশ্চিমা রীতির ব্যাংকও ওইসব দেশে চালু আছে।

লিবিয়া ইতোমধ্যেই উত্তর আফ্রিকার মধ্যে সবচে রক্ষণশীল দেশে পরিণত হয়েছে। দেশটিতে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

লিবিয়ায় গণতন্ত্র সংহত করতে আবদুল জলিলের পরিকল্পনা অন্য ইসলামপন্থীদের খুশি করবে তাতে সন্দেহ নেই। গাদ্দাফির শাসনের বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রতিক বিপ্লবে এই লোকেরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

তবে লিবিয়ার তরুণ প্রজন্ম যারা মূলত সাধারণ মুসলিম, এদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পশ্চিমা ঘেঁষা। আবদুল জলিলের পরিকল্পনা এই তরুণদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।